জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,১৯ জানুয়ারী : জীবনে চলার পথে আমাদের মনের মাধুরী দিয়ে গড়ে তোলা যেসব কাম্য বস্তু ‘তোমার আলোয় আলোকিত হওয়ার কথা’ থাকা সত্ত্বেও অধরা থেকে যায় তার অন্যতম হলো প্রেম। না পাওয়ার বা পেয়ে হারানোর বেদনা বাকি জীবনটাকে হতাশায় ভরিয়ে দেয়। অনেক সময় মেয়েটিকে শুনতে হয় ‘তুমি তো দেহপসারিনী’, অথবা ‘কে কী পারে কে কী পারেনা আগে থেকে কি বোঝা যায়’- এরকম টুকরো টুকরো বাক্যবন্ধনী চলচ্চিত্র প্রেমী মানুষের মনে গভীর দাগ কেটে দিয়ে যাবে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ‘অধরা মাধুরী’।
সাধারণত প্রেমের পরিপূর্ণতা ঘটে বিয়ের মধ্যে দিয়ে। ৯ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের এই চলচ্চিত্রটি গড়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার অরুণ ও গরীবের মেয়ে চন্দ্রার প্রেমকে কেন্দ্র করে। পরস্পরকে গভীরভাবে ভাল বাসলেও সেই প্রেম পরিণতি লাভ করেনি অধরা থেকে গেছে- ‘গরীবের স্বপ্ন দেখতে নেই’। অরুণের বন্ধু কর্তৃক ধর্ষিতা চন্দ্রার স্থান হয় নিষিদ্ধ পল্লীতে। ঘটনাচক্রে বারোয়ারি পুজোর জন্য প্রয়োজনীয় নিষিদ্ধ পল্লীর মাটি আনতে গিয়ে অরুণের সন্তান চন্দ্রার মধ্যে ঠাকুরের রূপ খুঁজে পায়।
মুখোমুখি নয়, অরুণ-চন্দ্রার টেলিফোনিক কথোপকথনের মধ্যে দিয়ে কাহিনী এগিয়ে চললেও প্রতিটি মুহূর্তে নিখুঁতভাবে ধরা পড়ে তাদের অভিব্যক্তি। বিশেষ করে একজন দেহপসারিনীর সঙ্গে নিজের সন্তানের সাক্ষাতের কথা শুনে অরুণের উৎকণ্ঠা এবং চন্দ্রার প্রতিক্রিয়া ছিল চোখে পড়ার মত। আলো-আঁধারি পরিবেশ ও যথাযথ মেকাপ চন্দ্রার চরিত্রটিতে অন্যমাত্রা এনে দেয়। তারা যে জাত শিল্পী সেটা বুঝতে দর্শকদের অসুবিধা হয়না। নেপথ্যে ভেসে আসা ‘কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে…’ দর্শকদের চোখে জল এনে দেবেই।
দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলা সিরিয়াল জগতের সুপরিচিত মুখ সজল কুমার বিশ্বাস ও মল্লিকা সিংহরায়। ‘চালচিত্র’ পরিবেশিত ‘অধরা মাধুরী’-র কাহিনী, চিত্রনাট্য, আবহ, চিত্ররূপ ও সম্পাদনায় আছেন মল্লিকা সিংহরায় স্বয়ং। নির্দেশনায় আছেন দুই শিল্পী নিজেরাই। প্রসঙ্গত এই দুই শিল্পীর নির্দেশনায় ও অভিনীত একাধিক স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র প্রেমীদের মনে দাগ কেটেছে।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী রাণীগঞ্জের রাজা চৌধুরী বললেন – স্বল্পদৈর্ঘ্যের হলেও ‘অধরা মাধুরী’ বেশ কয়েকটি হলিউড ও বলিউডের চলচ্চিত্রের কথা মনে করিয়ে দেয়। দুই শিল্পীর অভিনয় তো অসাধারণ।মল্লিকা দেবী বললেন,স্বল্প পরিসরে দর্শকদের মন ভরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কতটা পেরেছি তার বিচারের ভার দর্শকদের উপর ছেড়ে দিলাম।।