একজন ‘কৃষ্ণাঙ্গ’ যিনি লন্ডনে থাকতে পারেন এবং শ্বেতাঙ্গদের সাথে কোনো সমস্যা ছাড়াই থাকতে পারেন । একই মেসে খেতে পারেন এবং হঠাৎ করে একদিন তাকে ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয় । এই একই ব্যক্তি পরে ‘শেতাঙ্গ’ সেনাবাহিনীতে সার্জেন্ট মেজর হন । শুধু তাইই নয়,দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিটিশ বোয়ার যুদ্ধের সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স ইউনিটে নিযুক্ত হন তিনি । মিলিটারি ইউনিফর্মে করমচাঁদ গান্ধীর ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে । সার্জেন্ট মেজর গান্ধী লিখে সার্চ করলে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর গ্রুপ ছবির একেবারে পিছনে প্রায় মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় গান্ধীকে ।
হঠাৎ, ১৯১৫ সালে,৪৬ বছর বয়সে, দেশপ্রেম জেগে ওঠে এবং তিনি তার সামরিক ইউনিফর্ম খুলে ফেলেন। নিজেকে ব্যারিস্টার ঘোষণা করেন (যেখানে রানী লক্ষ্মী বাই, ক্ষুদিরাম বোস, বিসমিল, ভগৎ সিং এবং চন্দ্রশেখর আজাদের মতো অনেক মহান দেশপ্রেমিক, যাদের অনেকই কমবেশি মাত্র ২৫ বছর বয়সে দেশের জন্য শহীদ হয়েছিলেন) । তারপর, মহাত্মা বুদ্ধের মতো, তাকে শান্তি ও অহিংসার দূত বানানো হয় এবং সরাসরি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাঠানো হয় ভারতে । আফ্রিকা থেকে সোজা চম্পারন, যেখানে তিনি নীলকরের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকদের আন্দোলন কার্যত হাইজ্যাক করেন । অহিংসার বাণী শুনিয়ে একটি সহিংস আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে রূপান্তরিত করেন ।
মহাত্মা বুদ্ধের মতো, দিনের বেলায় নিজেকে ধুতিতে জড়িয়ে, শান্তি ও অহিংসার নামে, তিনি স্বাধীনতার জন্য ভারতীয়দের প্রতিটি সহিংস আন্দোলনকে ম্লান করে দেন এবং কোনও পরিণতি ছাড়াই হঠাৎ শেষ করে দেন ৷ আর এদিকে ব্রিটিশরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে থাকে । অহিংসার কথিত পুরোহিতরা… দিনে বুদ্ধের মতো দিগম্বর এবং রাতে মহাবীর জৈন হয়ে ওঠেন। মহান যোগী মহাবীর জৈন নগ্ন ছিলেন কিন্তু অপবিত্র ছিলেন না। এই নগ্ন ফকির তার ভাইঝি ছাড়াও অনেক মহিলার সাথে উলঙ্গ হয়ে ঘুমায় এবং ব্রহ্মচর্যের একটি পরীক্ষা বলে চালিয়ে দেয় (তিনি নিজেই তার “মাই এক্সপেরিমেন্টস উইথ ট্রুথ” গ্রন্থে এটি স্বীকার করেছেন একথা)।
এই ‘ব্রিটিশ এজেন্টের’ নাম দিনে করমচাঁদ এবং রাতে চাঁদ হয় এবং এই ঐতিহ্য আজও অব্যাহত রয়েছে এই অভাগা দেশে । অহিংসার এই পুরোহিত প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রকাশ্যে ব্রিটিশদের সমর্থন করেন এবং তাঁর অহিংসার নীতি উপেক্ষা করে ভারতীয়দের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বলেন এবং যুদ্ধ করতে বলেন যাতে ব্রিটিশ রাজকে রক্ষা করা যায় । তখন অহিংসা তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। নেতাজির সাথে মতপার্থক্যও একই কারণে যে ব্রিটিশদের পক্ষে সহিংস যুদ্ধ করা যদি ন্যায়সঙ্গত হয় তবে নিজের দেশের জন্য সহিংস আন্দোলন করা অন্যায় হবে কেন?
যে দেশ ভাগ করবে সেই জাতির পিতা হবে ! যে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করে সে অহিংসার পুরোহিত ও মহাত্মা হয় ! সে দিল্লির মন্দিরে কোরান পড়ার জেদ পূরণের জন্য পুলিশকে ডাকে, কিন্তু কখনোই মসজিদে গীতা বা রামায়ণ পড়ার কথা তার মাথায় আসে না । পাকিস্তানকে ৫৫ কোটি এবং আজকের বাংলাদেশের জন্য ১৫ কিলোমিটার চওড়া করিডোর, শুধুমাত্র মুসলমানরা যার উভয় পাশে ১০ কিলোমিটার জমি কিনতে পারে, এবং আমরণ অনশনে যাওয়ার হুমকি দিয়ে রীতিমতো ব্ল্যাকমেইল করেন।
আদপে গান্ধী শব্দটি একটি ব্র্যান্ড এবং একটি ঢাল। ব্রিটিশরাও এই ঢালের আড়ালে ভগৎ সিং, আজাদ, সুখদেব, রাজগুরু এবং নেতাজি সুভাষের মতো বিপ্লবী বীরদের নির্মূল করেছিল। আজও বালাকোট গান্ধীর নামেই করতে হয়। আগামীকাল সারা বিশ্বে আমাদেরও সন্ত্রাসীদের মারতে হবে এবং জিহাদিদের পিষে ফেলতে হবে, আর গান্ধীর নামে অহিংসা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে এটা করতে হবে ।
গান্ধী একটি খুব আকর্ষণীয় থিম, তাই নরেন্দ্র মোদীও … “গান্ধী গান্ধী” করেন…। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গান্ধী নামের ঢাল ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে অস্তিনে তলোয়ার লুকিয়ে রেখেছে । যীশুর ভালবাসা, শান্তি ও ক্ষমার নামে অন্য দেশ দখল করছে ।ইসলামও শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম, তারাও এই ছলে নিজেদের তলোয়ার লুকিয়ে রেখেছে। তাহলে ‘গান্ধী ঢাল’-এর আড়ালে ‘গডসে তলোয়ার’ লুকিয়ে রাখায় অপরাধ কোথায় ?