এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৯ নভেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের অদূরে ২২ বিঘার পাশের একটা লজে বসেছিল এক যুবকের বিয়ের আসর । নিমন্ত্রিতরা তখন বিয়েবাড়িতে গিজগিজ করছে । হঠাৎ সাতবছরের নাবালক সন্তানের সঙ্গে পরিবার পরিজনদের নিয়ে এক মহিলা সেখানে উপস্থিত হতেই পরিবেশ পুরো বদলে যায় । শুরু হয় তুমুল বাকবিতণ্ডা । ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । সামাল দিতে ছুটে আসে ভাতার থানার পুলিশ ৷ তখন জানা যায় যে যুবক প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়াতেই ঝামেলার সূত্রপাত । এই ঘটনাক্রমের পর নিমন্ত্রিতদের অধিকাংশের মধ্যাহ্ন ভোজন জোটেনি । মনমরা হয়ে তারা ফিরে যান ।
জানা গেছে,যুবকের বাড়ি মঙ্গলকোট থানার খুর্তুবা গ্রামে । যুবকের প্রথম বিয়ে হয়েছিল একই থানা এলাকার নপাড়া গ্রামের এক তরুনীর সঙ্গে । প্রথম পক্ষের ৭ বছরের এক সন্তানও রয়েছে । তবে দাম্পত্য কলহের কারনে যুবকের প্রথমপক্ষের স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকেন । এদিকে খুর্তুবা গ্রামের ওই যুবক দ্বিতীয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন । গ্রাম থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ভাতারের ওই বিয়েবাড়িতে আজ রবিবার বসেছিল বিয়ের আসর । ছিল মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন । প্রচুর নিমন্ত্রিত এসেছিল । কিন্তু ধর্মীর রীতি মেনে বিয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই সন্তানকে নিয়ে সেখানে হানা দেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী । তার সঙ্গে আসেন পরিবার ও প্রতিবেশী মিলে বেশ কিছু লোকজন । যুবকের প্রথম স্ত্রীর অভিযোগ যে তাঁকে আইনত ডিভোর্স না দিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করতে এসেছেন স্বামী। বিয়ে বন্ধ করে আগের পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা মেটানোর দাবি জানান তিনি । আর এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বেধে যায় তুমুল বাকবিতণ্ডা । পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে যায় যে ভাতার থানাতে পর্যন্ত খবর চলে যায়। পুলিশ ছুটে আসে । শেষে পুলিশ দুপক্ষকে সরিয়ে দিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । এরপর বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই পাত্র এবং পাত্রীকে বের করে নিয়ে চলে যান তাঁদের পরিবারের লোকজন। অন্যদিকে প্রথমপক্ষের স্ত্রী ও তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনও বাড়ি ফিরে যান। তবে যাওয়ার আগে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে যান যে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন ।
তবে এই ঘটনায় সবচেয়ে বিপাকে পড়তে হয় বিয়েতে আগত নিমন্ত্রিতদের । কারন বিয়েতে ঢালাও খাওয়া দাওয়ার আয়োজন ছিল । কিন্তু এই প্রকার বেদনাদায়ক পরিস্থিতিতে খাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেকে । শেষ পর্যন্ত কেউ কেউ খাওয়া দাওয়া করলেও বাকিরা অভুক্ত অবস্থাতেই বাড়ি ফিরে যান ।।

