প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ ডিসেম্বর : একদা সিনেমা প্রেমী মহলে যথেষ্টই সাড়া ফেলে দিয়েছিল ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র ‘এক ফুল দো মালি’। আর এবার রিলের সেই ছবির একেবারে উল্টো রিয়েল লাইফের ঘটনা চাক্ষুষ করলেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার ধর্মডাঙার বাসিন্দারা।তারা শুক্রবার চাক্ষুষ করলেন এক ফুলকে নিয়ে দুই মালকিনের দড়ি টানাটানি। নিজেদের স্ত্রী হিসাবে দাবি করে অধিকার আদায়ের জন্যে দুই মহিলা এদিন একসঙ্গে কোমর বেঁধে ধরনা দিলেন ডাঙাপাড়ার শুভঙ্কর হালদারের বাড়িতে। যা দেখতে হালদার বাড়িতে ভিড় জমালেন এলাকার বহু মানুষ । যদিও শুভঙ্কর দাবি করেন,তাঁকে ফাঁসাতেই পরিকল্পনা করেই দুই মহিলা এমন নাটক করছেন।
ধরনায় বসা চামেলি হাওলাদার নামে এক মহিলা নিজেকে শুভঙ্করের স্ত্রীর বলে দাবি করেন। শুধু স্ত্রী হিসাবে দাবি করাই নয় ,চামেলি জানান তাঁদের
নয় বছর বয়সী একটি ছেলে ও ষোল বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।তবু তাঁর স্বামী শুভঙ্কর তাদের খেতে পড়তে দিতেননা। কাজের নাম করে বেশীর ভাগ দিন তিনি বাইরে থাকতেন।চামেলি অভিযোগ আরও বলেন,আমার স্বামী তিনটি বিয়ে করেছে । বিভিন্ন জায়গায় সংসার পেতে থাকে।সেইসব প্রমাণ নিয়েই আজ এসেছি আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে। একই সঙ্গে ডিভোর্স চাইতেই।
অন্যদিকে কাকলি নামের অপর আর একষ মহিলা আবার একটি নথি দেখিয়ে দাবি করেন শুভঙ্করের তাঁকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছে ।বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে জানিয়ে শুভঙ্কর আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা চায় । বাড়ি বন্দক রেখে তিনি সেই টাকা শুভঙ্করকে দিয়েছে।কাকলি তার অভিযোগে আরও বলেন,আগের স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গেছে বলে আমায় রেজিস্ট্রি বিয়ের আগে শুভঙ্কর জানিয়েছিল । অথচ শুভঙ্কর এখন আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছে না। শুভঙ্কর এখন অন্য একটি মহিলার সঙ্গে প্রেমে মজেছে। এসব মানবো না । ধরনায় বসে কাকলি স্পষ্ট বার্তা দেন,হয় আমার কাছ থেকে নেওয়া সমস্ত টাকা পয়সা শুভঙ্কর ফেরৎ দিক,না হলে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে শুভঙ্কর আমাকে ওঁর ঘরে তুলুক ।
দুই মহিলার তোলা এইসব অভিযোগ প্রসঙ্গে
শুভঙ্করের সাফাই ,দু’জনের একজন আমার বিবাহিত স্ত্রী ঠিকই ।তার সঙ্গে ৪ বছর সংসার করেছি।তাহলে এখন কেন ওই মহিলাকে নিয়ে সংসার করছেন না? এর উত্তরে শুভঙ্কর বলেন, আমি না থাকা কালে ওই মহিলা আমার পরিবারের সকলের নামে মামলা করেছে ।আর অপর মহিলার সঙ্গে কি সম্পর্ক ? তার উত্তরে শুভঙ্কর বলেন,ওই মহিলা কালনার কদমতলায় থাকেন।উনি আমার মত বেশ কয়েকজনকে ফাঁসিয়েছেন।উনার জন্য অনেকে আত্মহত্যাও করেছে।কাকলির দেখানো বিয়ের রেজিস্ট্রির নথির সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে শুভঙ্করের সাফাই,’আমাকে ফাঁসিয়েছে ।’ সব শুনে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মন্ডলের বক্তব্য ,’আইনের দরবার ছাড়া এর বিচার সম্ভব নয়’।।