এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ নভেম্বর : সিপিএমের “মহান কমরেড” ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মৃত জ্যোতি বসুকে “মানুষের বেশে একটি মূর্তিমান শয়তান” বলেছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল ও দক্ষিণপন্থী প্রবীন লেখক তথাগত রায় । আর একারনে তথাগত রায়ের উপর বেদম চটেছে বামপন্থীরা ৷ কেউ তাকে “দাদু” বলে কটাক্ষ করছে । কেউ তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ।
আসলে, সায়ন চক্রবর্তী নামে একজন এক্স ব্যবহারকারী ১২ নভেম্বর জ্যোতি বসুকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন । যার শিরোনাম হল : “মরিচঝাপি : জ্যোতি বসুর বাংলার ভুলে যাওয়া ট্র্যাজেডি” । সেই পোস্টটি ট্যাগ করে তথাগত রায় লেখেন,”জ্যোতি বসুর মত স্বার্থপর, নিষ্ঠুর, বিবেকবর্জিত মানুষ গত এক শতাব্দীর মধ্যে বাংলায় জন্মেছে কি না সন্দেহ । এরই নেতৃত্বে বাঙালি কম্যুনিস্টরা পূর্ব পাকিস্তান থেকে ইসলামী নির্যাতনে বিতাড়িত হিন্দু উদ্বাস্তুদের আন্দামানে পুনর্বাসনে বাধা সৃষ্টি করেছিল, ভুল বুঝিয়েছিল। তারপর যখন তারা বামফ্রন্ট সরকারের ক্ষমতায় আসায় উৎসাহিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল তখন মরিচঝাঁপির গণহত্যা ঘটিয়েছিল। সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে ইংরেজি পড়া তুলে দিয়ে বাঙালির মেধাবী ছেলেদের শিক্ষাগতভাবে ল্যাংড়া করে দিয়েছিল, কিন্তু নিজের নাতনিদের উচ্চকোটির ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়িয়েছিল । “যে কোনো মূল্যে কম্পিউটার রুখছি, রুখব”, আওয়াজ তুলে পশ্চিমবঙ্গে কর্মসংস্থানের সর্বনাশ করেছিল । ৫৮,০০০ কারখানায় শ্রমিক অশান্তি বাধিয়ে কারখানা তুলে দিয়েছিল, লক্ষ লক্ষ শ্রমিককে বেকার করেছিল । আজীবন সহযোগী যতীন চক্রবর্তী-এর ছেলের বেঙ্গল ল্যাম্প কারখানায় দু’নম্বরি করার দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করেছিলেন বলে তাঁকে রাজনৈতিক নির্বাসনে পাঠিয়েছিল । এর চুরিচামারিতে অতিষ্ঠ হয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “চোরেদের সরকারে থাকব না”, মন্ত্রীপদে ইস্তফা দিয়েছিলেন । এদিকে সল্ট লেকের বিলাসবহুল ভবনে বসে নিজের শালীর সঙ্গে লটরপটর করে গেছে – ওর বয়সে যতটুকু সম্ভব । মানুষের বেশে একটি মূর্তিমান শয়তান ।”
তার এই পোস্টের পর বহু অরাজনৈতিক মানুষ সমর্থন করেছেন । কিন্তু বেজায় চটেছে বামপন্থীরা । লালমোহন নামে একজন লিখেছেন,”আমি যেটুকু বুঝেছি, জ্যোতি বাবুকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতাই আপনার নেই ।আর তাছাড়া আপনার রাগ থাকাটা স্বাভাবিক । জ্যোতি বাবুই তো বলেছিলেন বিজেপি ২xbridegroom দের দল ।” শুভ নামে একজন লিখেছেন,”দাদুর খুব কষ্ট, কারণ দাদু ওই সময়ে এই বাংলায় RSS ঢোকাতে পারেনি৷” অনীক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া,”এই ভাটের কথা লেখার জন্য মোদী, অমিত শাহ নিদেনপক্ষে মোদীকে বাপ বলা ছেলে শুভেন্দু অধিকারী আপনার পোষ্টে কী লাইক দিলো।”
দীপ চক্রবর্তী লিখেছেন,”দাদুর একটু বার্নল লাগবে … বয়স হলে চুলকানি বাড়ে বেশি ।”
লক্ষ্যনীয় যে তথাগত রায়কে শুধুই ব্যক্তিগত আক্রমণ করে যাচ্ছে বামপন্থীরা৷ তার ভিত্তিতে আজ তিনি জবাবও দিয়েছেন । তথাগত রায় আজকে ফের একটি পোস্ট করেছেন । যাতে তিনি লিখেছেন, “গতকাল জ্যোতি বসুর কুকীর্তির ফিরিস্তি (আংশিক) দিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম । তাতে ক্রোধে অন্ধ হয়ে কমরেডরা শুধু হাউ হাউ করে এক কথা বলেছে, আমি কখনো নির্বাচনে জিতি নি, তাই আমার জ্যোতি সম্বন্ধে কিছু বলার অধিকার নেই । যদিও আমার দেওয়া একটি অভিযোগও খণ্ডন করতে পারে নি ।”
তিনি আরও লিখেছেন,”কমরেডরা আজকাল এতটা গাড়ল হয় তা জানতাম না। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য বা মেসির ফুটবল খেলার সমালোচনা করতে রবীন্দ্রনাথ বা মেসি হবার দরকার নেই, সাহিত্য বা ফুটবল বুঝলেই হল । তেমনি জ্যোতি বসুর শয়তানির সমালোচনা করার জন্য তার মত শয়তান হবার কোন দরকার নেই, রাজনীতি বুঝলেই হল ।”
Author : Eidin.

