এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৪ সেপ্টেম্বর : ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ৷ এদিকে স্থানীয় নির্বাচন গুলিতে উগ্র ইসলামি সংগঠন “জামাত ইসলামি” র জয়জয়কার । ফলে সাধারণ নির্বাচনে ওই উগ্র ইসলামি দলের জয়ের সম্ভাবনা এক প্রকার নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে । ভারতের কেরালা রাজ্যের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর জামাত ইসলামির জয়ের ইঙ্গিত দিয়ে দলটির প্রশংসা করে এক্স-এ একটি পোস্ট করেছেন । যানিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন ইংরাজি সাপ্তাহিক পত্রিকা ব্লিটজের সম্পাদক সালহা উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী ।
তিনি থারুরের পোস্টের স্ক্রীন শর্ট এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন,’কংগ্রেস নেতা শশী থারুর জামাত-ই- ইসলামির প্রশংসা করেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনে তাদের জয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন! একটি টুইটে, ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুর albd1971 এবং bdbnp78 কে “দুর্নীতি ও অশাসনের জন্য কলঙ্কিত” বলে সমালোচনা করেছেন এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনে জামাত-ই-ইসলামির জয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং জিজ্ঞাসা করেছেন, ভারত কি “পাশের বাড়িতে জামাত সংখ্যাগরিষ্ঠ” দলের সাথে মোকাবিলা করবে ? শোয়েব চৌধুরী উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘যদিও জামাত মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি শাখা, যারা শরিয়া শাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষে। এটি হিন্দু এবং অমুসলিমদের কাছ থেকে জিজিয়া আদায়কে সমর্থন করে – ইস্রায়েলকে “শত্রু জাতি” এবং ইহুদি ও খ্রিস্টানদের “আল্লাহর শত্রু” বলে মনে করে।’
তবে শুধু সালহা উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী নন, বাংলাদেশের অনেকে জামাত-ই-ইসলামির সম্ভাব্য ক্ষমতা দখলের আশঙ্কায় আতঙ্কিত । এনিয়ে “ফয় জল” নামে এক বাংলাদেশি যুবকের একটা ফেসবুক পোস্ট সকলের নজর কেড়েছে । ওই পোস্টে তিনি আপাদমস্তক ঢাকা আফগানি বোরকা পরিহিতা মহিলাদের ছবি পোস্ট করেছেন । তিনি লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম! এই ধরনের আফগানি বোরকা ঢাকার কোথায় পাওয়া যায় ? আমার বান্ধবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগে পড়াশোনা করে। ডাকসু নির্বাচনে যেহেতু জামায়াত বিজয়ী হয়েছে সেহেতু কিছুদিন পর-ই এই ধরনের পোশাক পরা বাধ্যতামূলক হবে ঢাবি ক্যাম্পাসে। তাই আগে আগে কিনে রাখতে চাচ্ছি বান্ধবীর জন্য ।’
প্রসঙ্গত,২০২৫ সালের জুলাই মাসে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ – যা “জামায়াত চোর মোনাই” নামে পরিচিত-তালিবান-শাসিত আফগানিস্তানের আদলে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে । বাংলাদেশের বর্তমান তদারকি সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসের অন্যতম প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামী, একই ধরণের ইসলামী লক্ষ্য অর্জনের জন্য চাপ দিচ্ছে এবং সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করছে। রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন এবং ইসলামী মৌলবাদের এই বিপজ্জনক সমন্বয় বাংলাদেশকে চরমপন্থার আঞ্চলিক কেন্দ্রস্থলে রূপান্তরিত করার হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে । এনিয়ে
বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়ছে ।
চলতি বছরের শুরুর দিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আর্টিকেল ১৯, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, পেন আমেরিকা এবং কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট সহ প্রধান মানবাধিকার সংস্থাগুলির একটি জোট একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছে : “আমরা বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগকারী ব্যক্তি এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার এবং হয়রানি ও সহিংসতার সংখ্যা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি । রাষ্ট্রীয় শক্তির আক্রমণ থেকে জনগণকে রক্ষা করা সহ মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের রয়েছে।”
ইউনূস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন,কিন্তু তার ইসলামপন্থী মিত্ররা ইতিমধ্যেই তাদের পথভ্রষ্ট করার জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের তালইবান-ধাঁচের কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে ঢোকার সম্ভাবনা এখন আর কল্পনাপ্রসূত নয় – এটি দ্রুত বাস্তবে পরিণত হচ্ছে। যদি বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে সাংবাদিকরা কেবল শিকার হবেন না; গণতন্ত্র নিজেই নীরবে ধ্বংস হয়ে যাবে বলে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে ।।

