এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৫ সেপ্টেম্বর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে । এই অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্ব যেমন থাকবে না, তেমনি কোনো বিলও আনা হবে না। কিন্তু বর্ষা অধিবেশন সবেমাত্র শেষ হওয়ার পর সংসদের এই বিশেষ অধিবেশনের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে । যদিও সেই উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় । এই বিষয়ে মোদী সরকার এখনো পর্যন্ত কিছু খোলসা করেনি । মিডিয়াতে এনিয়ে বিভিন্ন জল্পনা চলছে এবং এবং নিত্য নতুন বিতর্ক শুরু চলছে । এদিকে বিরোধী দলগুলিও এতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ।
এর আগে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছে দেশ জুড়ে । বিশেষ করে কংগ্রেস সহ দেশের আঞ্চলিক দলগুলি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে আসরে নামে ।
তবে এজন্য সম্প্রতি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, প্রতিবেদন তৈরি করতে কমিটির দীর্ঘ সময় লাগতে পারে । যেকারনে আপাতত ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল নিয়ে বিজেপি বিরোধী দলগুলির বিশেষ মুখ খুলছে না । এখন ইংরেজদের দেওয়া ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাতিল করে ‘ভারত’ রাখার জল্পনা নিয়ে আসর গরম করতে শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেসের মত কিছু রাজনৈতিক দল । আর এই বিতর্কের নেপথ্যে রয়েছে রয়েছে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে পাঠানো নিমন্ত্রণ পত্র । নিয়ম অনুযায়ী ভারতের রাষ্ট্রপতি যদি কাউকে চিঠি লেখেন তাতে চিরাচরিত ভাবে লেখা থাকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ এই কথাটি। কিন্তু জি২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতাদের নিমন্ত্রণ পত্রে লেখা রয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ একটি টুইটে এই বিষয়ে লিখেছেন,’সুতরাং এই খবরটি আসলে সত্য। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ৯ সেপ্টেম্বর জি-২০ নৈশভোজের জন্য পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে যথারীতি ‘ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রপতি’র পরিবর্তে ‘ভারতের রাষ্ট্রপতি’ লেখা হয়েছে। এখন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১ পরিবর্তন করে বলা যেতে পারে – ‘ভারত, যেটি ইন্ডিয়া ছিল, রাজ্যগুলির একটি ইউনিয়ন ৷ কিন্তু, এখন এই রাজ্যগুলিও আক্রমণের মুখে পড়েছে ৷ মিস্টার মোদী ইতিহাসকে বিকৃত করে ইন্ডিয়াকে বিভক্ত করতে পারেন । তবে আমরা নিরুৎসাহিত হব না । সর্বোপরি, ইন্ডিয়ার দলগুলোর উদ্দেশ্য কী ?এটির উদ্দেশ্য হল সম্প্রীতি আনা, মিলন এবং বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা । এর সাথে তিনি ‘জুড়েগা ভারত, জিতেগা ইন্ডিয়া’ নামের একটি ট্যাগলাইনও লিখেছেন।
তবে কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ ‘ইন্ডিয়া’ নাম পরিবির্তন করে ‘ভারত’ রাখার বিরোধিতা করলেও দক্ষিণী সুপারস্টার পবন কল্যাণ ‘ভারত’ নাম রাখার সমর্থন করেছেন । তিনি বলেছেন,’ইন্ডিয়া নামটি ব্রিটিশরা দিয়েছে কিন্তু ভারত নাম হল স্বদেশীয় ।’
‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’ বিতর্কের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আদিশ সি আগরওয়ালা বলেছেন,’ইন্ডিয়াকে সত্যিকারের ভারতে পরিণত করার জন্য মোদি সরকার সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে । ভারত নাম নিয়ে আমরা আরও সমৃদ্ধ হব। ইন্ডিয়া নামটি ব্রিটিশরা দিয়েছিল ।’
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘সংবিধান স্পষ্টভাবে বলে “ইন্ডিয়া হল ভারত…”। ভারত নামটি হাজার হাজার বছর ধরে আছে তাই নতুন কোনো নাম করার দরকার নেই। আমাদের দেশ ভারত ছিল, আছে এবং থাকবে। তিনি আরও বলেন,’আপনি ইন্ডিয়া জোটের কথা বলেছেন, কিন্তু এই নামের মধ্যে ‘এ’ মানে কী? কংগ্রেস যা শুরু করেছে তা হল আই এন ডি আই জোট…ওই সমস্ত মানুষ তাদের দোকানপাট খুলেছে এবং ফের দোকানপাট বন্ধ করে দেবে । কিন্তু ভারত ততদিন থাকবে যতদিন সূর্য ও চাঁদ থাকবে ।’ যদিও দেশের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের তরফে এখনো কোনো বিবৃতি সামনে আসেনি ।।