জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৮ মার্চ : রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে সঙ্গে রঙের উৎসব দোলের আনন্দে মেতে উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরার আপামর শহরবাসী। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসন্ত উৎসব পালিত হলেও গুসকরা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে বহু মানুষের উপস্থিতিতে মূল উৎসবটি হয় গুসকরা শহরের অনুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র বারোয়ারি তলায় ।
যেহেতু এটি ছিল দোলের মত একটি আনন্দ উৎসব তাই কিছুটা অসংগঠিত ছিল, নিয়মের কড়াকড়ি ছিল না । বাঁধনছাড়া মনের আনন্দে আট থেকে আশি – প্রত্যেকে পরস্পরকে আবির মাখিয়ে রাঙিয়ে দেয়। কখনো নীরব, কখনো বা সরব আনন্দে সবাই মেতে ওঠে। তবে সবার লক্ষ্য ছিল পুরসভার সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান তথা শহরবাসীর নয়নের মণি কুশল মুখার্জ্জী এবং ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম। পরিচিত হাসিমুখে তারা সবার ভালোবাসার অত্যাচার সহ্য করে। আবিরে ভরে ওঠে তাদের মাথা ও মুখ। মুহূর্তের মধ্যে তাদের চেনা মুখ অচেনা হয়ে যায়। পাশাপাশি তারাও সবার সঙ্গে অক্লেশে আনন্দে মেতে ওঠে, আবির মাখিয়েও দেয়। অসংগঠিত হলেও একটা অদৃশ্য শৃঙ্খল যেন উৎসবকে নিয়মের আগরে বেঁধে রাখে।
উৎসবের সঙ্গে মানানসই ভাবেই ছিল ছোট্ট একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মনামী চোংদারের সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের। এরপর সঙ্গীত পরিবেশন করে বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী তৃণা মুখার্জ্জী, আলো দে প্রমুখ। পৌলমী বিশ্বাস সহ অন্যান্যদের এবং এলাকার সুপরিচিত নৃত্য শিল্পী তথা শিক্ষক অলোক ভাদুরি (বাপ্পা) ও তার গোষ্ঠীর কচিকাচাদের নৃত্য উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।
উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদ্য নির্বাচিত পুরসভার চেয়ারম্যান তথা শহর তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম সহ অন্যান্য কাউন্সিলাররা। এছাড়াও শহর তৃণমূল যুব সভাপতি উৎপল লাহা, শহর ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌম্যদীপ্ত চ্যাটার্জ্জী, আউসগ্রাম ১নং ব্লক সভাপতি সালেক রহমান, শহর কার্যকরী সভাপতি মলয় চৌধুরী, জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত শ্যাম সহ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ এবং বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তির উপস্থিতিতে দোলের উৎসব সত্যিকারের রঙিন হয়ে ওঠে।
জানা যাচ্ছে বারোয়ারি তলার বসন্ত উৎসব এবার পাঁচ বছরে পদার্পণ করল। মূলত শহরের মানুষকে একত্রিত করে এক সুতোয় বাঁধার উদ্দেশ্যে এই বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়। তারপর থেকে প্রতি বছরই প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে আগত মানুষের অংশগ্রহণে উৎসব প্রকৃত সার্বজনীন রূপ পেয়েছে।
কুশল বাবু বললেন,’চেয়ারম্যানের পোশাকটা দূরে সরিয়ে রেখে আজ আমি সাধারণ গুসকরাবাসী হিসাবে সবার সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠেছি। এইভাবেই প্রতিটি উৎসবে সবার সঙ্গে আনন্দে মেতে থাকতে চাই। তিনি আরও বলেন – এটাই প্রকৃত বাংলার রূপ যেখানে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকেই আনন্দে মেতে উঠতে পারে ।’।