“লাভ জিহাদ”-এ ফেঁসে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেছে তরুনী কন্যা । ধর্মান্তরিত ও নাম বদল করে প্রেমিকের সঙ্গে নিকাহও করেছে । এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে অপহরণের মামলা দায়ের করেছেন বাবা-মা । তাদের আশা ছিল যে তাদের আদরের একমাত্র সন্তান অবশ্যই ফিরে আসবে । কিন্তু বাবা-মায়ের উপস্থিতিতে মেয়ে যখন সাফ জানিয়ে দেয় যে সে প্রেমিকের সঙ্গেই থাকবে তখন ভরা এজলাসের মধ্যে মর্মভেদী হাহাকার করে ওঠেন অসহায় বাবা-মা । বাংলাদেশের ঝিনাইদহ ডিসি আদালতের ঘটনা । পরে বাবা গোপাল চন্দ্র শর্মা ঝিনাইদহ ডিসি কোর্ট প্রাঙ্গণে এসে হাত আকাশের দিকে তুলে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মেয়ের প্রেমিককে শাপশাপান্ত করে বলেন,’হে ভগবান ওর পরিবার যেন বজ্রাঘাতে মরে, ওদের ধ্বংস করে দিও।’ একজন অসহায় পিতার এই মর্মভেদী হাহাকারে উপস্থিত হিন্দুদের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে ।
বাংলাদেশের ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুর গোবিনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা গোপাল চন্দ্র শর্মার একমাত্র মেয়ে অন্তি শর্মা কলেজে পড়তে পড়তেই রাকিব হোসেন নামে এক মুসলিম যুবকের প্রেমের জালে ফেঁসে যায় । গত ২ অক্টোবর অন্তি শর্মা ধর্মান্তরিত হয় । তার নতুন পরিচয় হয়ে ওঠে হিরা খাতুন মালা।তারপর ১০ অক্টোবর ঝিনাইদহ কোর্টে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন ও তিন লাখ টাকা কাবিনে তাদের নিকাহ সম্পন্ন হয় ।ঘটনা জানতে পেরে শোকে ভেঙে পড়েন গোপাল,তার স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন । মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশায় তিনি থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন৷ পুলিশ অন্তি শর্মা উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় রাখে।
অন্যদিকে তার স্বামী রাকিব হোসেন স্ত্রীকে ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন। অধিকতর শুনানির দিন আদালত হয়ে ওঠে জনাকীর্ণ । সবাই নিঃশ্বাস আটকে অপেক্ষায় মালা কোন পথ বেছে নেবেন? ম্যাজিস্ট্রেট মালাকে যখন তাকে প্রশ্ন করেন, তুমি বাবার কাছে ফিরবে, নাকি স্বামীর কাছে? তখন এক মুহূর্ত নীরবতা। এরপর দৃঢ় কণ্ঠে মালা উচ্চারণ করেন, আমি স্বামীর বাড়িতে ফিরে যেতে চাই। একথা শুনেই আদালত কক্ষেই আর্তনাদ করে ওঠেন গোপাল চন্দ্র শর্মা ও তার স্ত্রী । পরিবারের লোকজন তাদের বাইরে বের করে নিয়ে আসেন । বাইরে আসতেই হতভাগ্য পিতা দু’হাত তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে আরাধ্য দেবতার কাছে ন্যায়বিচার চান৷
ঝিনাইদহ আদালত প্রাঙ্গণের সেই নির্দয় দুপুরে হয়ত মেয়ের কথিত প্রেম জিতেছে, কিন্তু হেরে গেছে পিতামাতার স্বপ্ন । আর এটা এমনই দৃশ্য ছিল যে, যেকোনো সিনেমাকেও হার মানিয়ে দেবে ।।

