এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৫ জুন : দেশে চলছে মুদ্রাস্ফীতি৷ হু হু করে কমছে মুদ্রার । নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া । সেই কারনে কর্মীদের সুরাহা করতে বিভিন্ন বেতন বাড়িয়েছিল মালিক । আর মালিকদের এই কৃতকর্মের জন্য প্রশংসার পরিবর্তে জেলে পাঠিয়েছে সরকার । এই আজব কান্ড ঘটিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার । সাধারণ মানুষদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে কোম্পানির মালিকদের বিরুদ্ধে ।
মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থান ঘটে । তারপর থেকে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের স্বাক্ষী হচ্ছে মিয়ানমারের জনগন । যুদ্ধের কারনে মিয়ানমারজুড়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে । মুদ্রার অবমূল্যায়ন আর আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতির কারণে সেখানে দিন দিন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী উ পিয়া ফিও জাও তার কর্মীদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন। মান্দালয় শহরে তিনটি মোবাইলের দোকানের মালিক উ পিয়া তার কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করেন। উচ্ছ্বসিত কর্মীরা খবরটি শেয়ার করেন ফেসবুকসহ বিভিন৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে উ পিয়ার উদারতার প্রশংসা করেন অনেকেই । তবে বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনী । মানুষকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনে উ পিয়াকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার দোকানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। দোকানগুলির বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, সমাজের শান্তি ও আইনশৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানোর কারণে দোকানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অন্তত ১০ ব্যবসায়ীকে উ পিয়ার মতো একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিয়ানমারের একজন আইনজ্ঞ জানান, মিয়ানমারে কর্মীদের বেতনবৃদ্ধি অবৈধ কোনো বিষয় নয়। তবে অর্থনৈতিক মন্দার মাঝে বেতন বৃদ্ধির মাধ্যমে লোকজনকে বিশ্বাস করানো হচ্ছে, দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে অন্য কোম্পানি কাজ করা কর্মীদের মধ্যে উস্কানি সৃষ্টি করা হচ্ছে । ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে- এমনটিই মনে করছে জান্তা কর্তৃপক্ষ । ফলে বেতন বৃদ্ধি করা মালিকদের কারাদণ্ডের মতো শাস্তি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে ।।