এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ জুলাই : কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সমগ্র দেশে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কমিশনের এই বিশেষ অভিযানে ভোটার তালিকা থেকে ভুয়া নাম বাদ দেওয়ার কাজ চলছে । বিশেষ করে রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি মুসলিমদের নাম বাদ যাচ্ছে ভোটার লিস্ট থেকে । বর্তমানে বিহারে এসআইআর চলছে এবং কাজ অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে ৷ কমিশন সূত্রে খবর, প্রায় ৭৫ লক্ষ ভুয়ো ভোটারের নাম বাদ যেতে চলেছে বিহারের ভোটার লিস্ট থেকে । চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর জোর কদমে শুরু হবে । ইতিমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে বলে জানা গেছে । শুভেন্দু অধিকারীর দাবি যে এ রাজ্যে অন্তত ১ কোটি ২৫ লক্ষ রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী ঘাঁটি গেড়ে আছে । তিনি আজ রবিবার নিজের বিধানসভা ক্ষেত্র নন্দীগ্রামে একটি দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এও দাবি করেছেন যে রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলি মিলে অন্তত এক লাখ বাংলাদেশী মেয়ে পাওয়া যাবে৷ যাদের ফেসবুকে পটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এনে বিয়ে করেছে মুসলিম সম্প্রদায় যুবকরা ।
নিজের দাবির স্বপক্ষে তিনি আজ একটা প্রমাণ পেশ করেছেন । মাইক্রো ব্লগিং সাইড এক্স-এ একটি এলাকার ভিডিও পোস্ট করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । পাশাপাশি কথিত বাঙালি নির্যাতন নিয়ে তৃণমূলের হতে চলা অবস্থান বিক্ষোভের একটা সুচিও পোস্ট করেছেন তিনি । শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে এলাকাটিতে অসংখ্য ঝুপড়ি রয়েছে । মূলত মুসলিম সম্প্রদায়ের সেখানে বসবাস । ভিডিওতে ঝুপড়ির আশেপাশে ভাঙাচোরা সামগ্রী ভর্তি বস্তা পড়ে থাকতে দেখা গেছে । ঘিঞ্জি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছে বহু মানুষ । তবে রয়েছে পানীয় জলের জন্য টিউবওয়েল এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থাও । দুই একটা ঝুপড়ির সামনে মোটরসাইকেল ও সাইকেল দেখা গেছে । এছাড়া মোটর ভ্যান নিয়ে ভাঙাচোরা সামগ্রী বহন করতেও দেখা গেছে । শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন যে ওই এলাকাটি হল কলকাতার বাগুইআটির উপকণ্ঠে ও নিউ টাউন রাজারহাট এলাকা । যেখানে মূলত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মুসলিমদের বসবাস । তারাই মমতা ব্যানার্জির একুশে জুলাই এর ‘সভা ভরিয়ে ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন।
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’কলকাতার বাগুইআটির উপকণ্ঠে ও নিউ টাউন রাজারহাট এলাকা অবৈধ বাংলাদেশী মুসলমানদের ডেরায় পরিনত হয়েছে, এই বাস্তবতার সাথে ওয়াকিবহাল নন, এই সব এলাকায় বসবাস করেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এই সব অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে প্রশাসনের সহযোগিতায় জাল ভারতীয় পরিচয় ও নথি তৈরি করে দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব। এদের নাম ইতিমধ্যেই ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হয়ে গেছে।’
তিনি আরও লিখেছেন,’এরাই তৃণমূলের ২১ জুলাই ও অন্যান্য সমাবেশে, মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করে, মাঠ ভরায়। একবার পশ্চিমবঙ্গে ধাতস্থ হয়ে গেলে দেশের অন্যান্য প্রান্তে শাখা প্রশাখা ছড়িয়ে দেয়। তাই দেশের অন্যান্য প্রদেশে ধর পাকড় শুরু হলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন তার কারণ এত কষ্ট করে নিজের ভোট ব্যাংক গড়ে তুলেছেন, এদের বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করলে ওনার সরকার তো দূর, দলেরই অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
তাই ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন অবধি নানা রকম রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে উদ্যত হয়েছেন মাননীয়া, এই সব অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের স্বার্থে। এই কর্মসূচির সাথে, ভারত কেশরী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মহতী উদ্যোগের ফলে ১৯৪৭ সালের ২০ শে জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইন সভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া পশ্চিমবঙ্গের জনগণের কোনো সম্বন্ধ নেই।’
সবশেষে তিনি জানান যে এই ভিডিও টি বাগুইআটি ও নিউ টাউন সংলগ্ন জ্যাংড়া হাতিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে স্থিত ঘুনি অঞ্চলের। অবৈধ বাংলাদেশীদের আস্তানা একেবারে কলকাতার চৌহদ্দি ছুয়ে ফেলেছে, এর পরে কলকাতার মধ্যে অবস্থান করবে…।’
রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর বন্ধ করার জন্য শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ‘ভাষা আন্দোলনকে’ ইস্যু করছে বলে অভিযোগ তুলছে বিজেপি । মমতা ব্যানার্জি ইতিমধ্যে বীরভূম জেলার বোলপুরে তথাকথিত ভাষা আন্দোলন শুরু করার উদ্দেশ্যে ২ দিনের সফরে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রীর এই সভাকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘বীরভূমে উনি মিছিল করবেন নারী নির্যাতনের পক্ষে । ওনার মিছেলে নিশ্চিতভাবে অনুব্রত মণ্ডল বলে একটা কদাকার ডাকাত থাকবে । বাংলা লজ্জা, তার নাম মমতা ।’।

