এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৮ জুলাই : ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন ২ মে বিকালে কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। ওই খুনের ঘটনায় ঘাতকদের দিয়েই প্রমান লোপাটের অভিযোগ ওঠে তৎকালীন নারকেলডাঙা থানার ওসি শুভজিৎ সেন,এসআই রত্না সরকার ও হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের বিরুদ্ধে । আজ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে ওই খুনের মামলার শুনানিতে তিন পুলিশ কর্মীকেই বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তবে মামলার অভিযুক্ত বেলেঘাটা তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল ও দুই কাউন্সিলর হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করায় পার পেয়ে গেছেন । তারা আজ হাজিরা দেননি ।
নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের শেষ ফেসবুক লাইভ ভিডিওটি শেয়ার করে শুভেন্দু অধিকারী এক্স-এ লিখেছেন,’২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যজুড়ে ভোট-পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মীদের উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। বেলেঘাটার অভিজিৎ সরকারের নৃশংস হত্যা তারই এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। গলায় তার পেঁচিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। এমনকী তার অবলা পোষ্যদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি। ভোট-পরবর্তী হিংসায় বহু বিজেপি কার্যকর্তারা প্রাণ হারিয়েছেন, মহিলাদের সম্ভ্রমহানি করা হয়েছে, লক্ষাধিক মানুষ ঘরছাড়া হয়েছিলেন, ও অনেকেই ভিন রাজ্যে শিবিরে আশ্রয় নেন।’
তিনি আরও লিখেছেন,’আজ অভিজিৎ সরকার হত্যা মামলায় কলকাতা পুলিশের তৎকালীন নারকেলডাঙা থানার ওসি শুভজিৎ সেন (পরে পদোন্নতি হয়ে এসিপি পদে অবসর গ্রহণ করেন), এসআই রত্না সরকার ও হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বিচারকের মন্তব্য, “রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গেলে সমাজের কী হবে?”
সিবিআই তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় দোষীদের কেউ রেহাই পাবে না।অভিজিৎ সরকারের আত্মার শান্তি ও তার পরিবারের জন্য ন্যায় বিচার আমাদের অঙ্গীকার। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না ভোট-পরবর্তী হিংসার প্রতিটি ঘটনার অপরাধীদের হিসেব হয়।’ তিনি হ্যাশট্যাগ খুনি মমতা ব্যবহার করেছেন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন ২ মে বিকালে কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। নিহতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকারের অভিযোগ,সেই সময় ঘটনাস্থলেই ছিল তৎকালীন নারকেলডাঙা থানার ওসি শুভজিৎ সেন,এসআই রত্না সরকার ও হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ । অভিজিৎকে বাঁচানো তো দুরের কথা ওই তিন পুলিশকর্মী ঘাতকদের দিয়েই প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা করেন । শুধু তাইই নয়,নারকেলডাঙা থানার সাব ইন্সপেক্টর রত্না সরকার অভিজিতের মাকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ওই হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ ।
শুরুতে এই মামলার তদন্ত কলকাতা পুলিশ করলেও পুলিশের বিরুদ্ধেই গুরুতর অভিযোগ তুলে সিবিআইয়ের তদন্তের দাবি জানায় নিহতের পরিবার । পরবর্কীতে আদালতের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের কাছে। আজ বিশেষ সিবিআই আদালতে ওই মামলার শুনানি ছিল । শুনানির সময় বিচারক রোহন সিনহা বলেন, ‘রক্ষকই যদি ভক্ষক হয় তাহলে সমাজ কী করবে! সমাজ অর্থাৎ আপনি-আমি।’।