প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ নভেম্বর : জমি সরকারের । তবুও সেই সরকারী জমি দখল করে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের বিরুদ্ধে। শুধু বিক্রি করাই নয় ,বর্ধমান ২ ব্লকের বাম বটতলা এলাকায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ের ধারে থাকা ওই সরকারী জমিতে বহুতল নির্মানে মদত দেওয়াতেও নাম জড়িয়েছে শাসক দলের দুই নেতার। এলাকাবাসীর কাছ থেকে এই সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েই মঙ্গলবার ওই জায়গায় পৌছে যান পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। সবকিছু খতিয়ে দেখার পর অভিযোগের সত্যতা মিলতেই সবাধিপতি নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি জমি পরিমাপ করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যেও ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক কে নির্দেশ দেন। তবে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক ইশু করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।তারা তৃণমূলের নেতাদের জমি চোর আখ্যা দিয়ে গলা ফাটানো শুরু করে দিয়েছে।
সরকারী জমি দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে এলাকার বাসিন্থারা সন্প্রতি জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে লিখিত ভাবে জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন,“এলাকার তৃণমূল নেতা ওই সরকারী জমি ‘দখল’ করে বিক্রি করছেন। এমনকি ওই জমিতে বহুতল বাড়ি তৈরি হওয়ার পিছনেও এলাকার এক
তৃণমূল নেতা, ব্লকের এক যুব নেতার সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে“। এমন অভিযোগ পেয়েই নড়ে চড়ে বসেন সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার । এদিন জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে করে নিয়ে তিনি বর্ধমান ২ ব্লকের বাম বটতলা এলাকায় পৌছে যান ।
সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন,এক নম্বর খতিয়ানের
সরকারি জমিতে কয়েকটি অস্থায়ী বাড়ি রয়েছে। আবার দেড়-দু’হাজার বর্গফুট জমির উপর নতুন একটি পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছে।ওইটি বহুতল বাড়ি গড়ে তোলা হচ্ছে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি সভাধিপতির । জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে সামনে পেয়ে কোন রাখঢাক না রেকে তাঁকে স্থানীয়রা জানিয়ে দেন,’বৈকুণ্ঠপুর-২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে সরকারি জমিতে বেআইনি বহুতল গড়ে উঠছে ।’ এই প্রসঙ্গে সভাধিপতি জানান,সরকারের জমি প্লট করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। ওই জমিটে অনেক বাড়ি তৈরি হয়েছে। এর পেছনে যে বা যারা রয়েছেন, তারা যে দলেরই হোক না কেনো তাদের রেয়াত করা হবে না।তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের নেতা তথা মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের নেতারের এই কীর্তি জেনে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি । সৌম্যরাজবাবু বলেন,’তৃণমূল আর চুরি সমার্থক। এতদিনে রাজ্যের মানুষ জেনে এসেছে তৃণমূলের নেতারা কয়লা,গরু,শিক্ষা ও রেশনের চাল চুরি কাণ্ডে জড়িত । এবার বাংলার মানুষ জানবে সরকারী জমি চুরিতেও তৃণমূলের নেতারা সিদ্ধহস্ত ।’ যদিও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনার এদিন আশ্বস্ত করেছেন, ঘটনা নিয়ে তিনি দলীয়ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করবেন ।।