এইদিন ওয়েবডেস্ক,বারাণসী,০৫ আগস্ট : বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙে মসজিদ নির্মান হয়েছিল কিনা তা একমাত্র পুরাতত্ত্ব বিভাগের সমীক্ষাতেই প্রমাণ করা সম্ভব । কিন্তু বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ ধামের ঠিক সামনেই নির্মিত জ্ঞানবাপি মসজিদ কমপ্লেক্সে ভারতীয় পুরাতাত্ত্ব বিভাগের(এএসআই) জরিপের বিরোধিতা প্রথম থেকেই করে আসছে আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ (এআইএম) পরিচালন কমিটি । এদিকে জ্ঞানবাপি কাঠামোয় ত্রিশুল,দেবদেবীর মূর্তি,হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন প্রতীক খোদাই থাকা সত্ত্বেও মুসলিম পক্ষের এই আপত্তিতে সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে ।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার থেকে এএসআই সমীক্ষা শুরু হয়েছে,এদিকে সমীক্ষা বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি । কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেয়েছে তারা । ‘এএসআই সমীক্ষায় আপত্তি কিসের?’ এই প্রশ্ন তুলে ক্যাম্পাসে চলমান জরিপ স্থগিত করতে অস্বীকার করেছে সুপ্রিম কোর্ট । সমীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে এএসআই সমীক্ষাকে সবুজ সংকেত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । শুনানির সময় মুসলিম পক্ষের যুক্তি শোনার পরে সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘অযোধ্যা মামলায়ও এএসআই সমীক্ষা করা হয়েছিল এবং আমরা প্রমাণের সমস্ত বিকল্প খোলা রাখব। কাঠামোর যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখব ।’
এর আগে বারাণসীর ট্রায়াল কোর্ট সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। বিষয়টি এলাহাবাদ হাইকোর্টে গেলে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ট্রায়াল কোর্টের আদেশ বহাল রাখে। এরপর শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে বিতর্কিত এলাকায় জরিপের কাজ শুরু করে এএসআই । জুম্মার নামাজ পড়ার দু’ঘণ্টার জন্য জরিপ বন্ধ থাকে । পুরো এলাকায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে । আজ শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে বিতর্কিত কাঠামোয় সমীক্ষা শুরু করেছেন ভারতীয় পুরাতাত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল ।
জানা গেছে,শুক্রবার এএসআই সমীক্ষার জন্য চারটি দল গঠন করে । দুটি দল কমপ্লেক্সের পশ্চিম দেয়ালে সমীক্ষা শুরু করে । একটি দল পূর্ব প্রাচীর, অন্যটি উত্তর প্রাচীর এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় তদন্তের জন্য নিযুক্ত রয়েছে । দলটি এই দেয়ালের পাশাপাশি ভবনের বাইরের দেয়ালের চারপাশে জিপিআর ব্যবহার করেছে । বাইরের অংশে শক্ত মাটি আছে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে । হাতে ধরা জিপিআরের সাহায্যে মাটি সরিয়ে বিশেষজ্ঞরা মেশিন থেকে প্রাপ্ত তথ্য রেকর্ড করছিলেন । বিকেল ৫ টায় জরিপ বন্ধ হয়ে যায় । ৩৩ সদস্যের দলটির নেতৃত্বে ছিলেন এডিজি অলোক ত্রিপাঠি, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, এএসআই দলের বিশেষজ্ঞরা ।
জ্ঞানবাপির পশ্চিম দেয়াল এবং তাতে প্রাপ্ত চিত্র বর্তমান ভবনের নকশার সাথে কোনোভাবেই মিল নেই । দেওয়ালটিতে হিন্দু মন্দিরের নিদর্শনে পরিপূর্ণ । হাতির শুড়ের আকৃতির একটি চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর ওপর তৈরি খোদাই, স্বস্তিক,পদ্মফুল ইত্যাদিও খোদাই করা রয়েছে । পশ্চিম দেয়ালটি মা শ্রিংগার গৌরীর মন্দিরের প্রবেশদ্বার । বিতর্কিত কাঠামোর পশ্চিম দেয়ালে মূলত ফোকাস করছে এএসআই । হাত দিয়ে দেয়ালের চারপাশের মাটির ঘাস সরিয়ে ভিডিওগ্রাফি ও ফটোগ্রাফি করা হচ্ছে । পরীক্ষা করা হচ্ছে দেওয়ালের পাথর । পশ্চিম দেয়ালের একটি দরজা পাথর দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে । ওই দরজাটি দেয়ালের টেক্সচারের সাথে মেলে কি না তাও পরীক্ষা করা হচ্ছে । আজ এএসআই-এর সমীক্ষায় রেডিয়েশন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে ।।