এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৪ এপ্রিল : বাংলাদেশে মুসলিম যুবকের প্রেমে পড়ে হিন্দু তরুনী বা কিশোরীদের ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে থাকে । কিন্তু হিন্দু যুবকের প্রেমে পড়ে কোনো মুসলিম তরুনী বা কিশোরীর ঘর ছাড়ার ঘটনা পারতপক্ষে শোনা যায় না । আর কোনো মুসলিম মেয়ে এই প্রকার কাজ করলেও তাকে চমকে ধমকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় । পাশাপাশি মেয়েটির হিন্দু প্রেমিক ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনাও ঘটে থাকে । এবার ঠিক উলটো ঘটনাটাই ঘটেছে বাংলাদেশে । এক মুসলিম গৃহবধূ হিন্দু প্রেমিকের হাত ধরে দেশান্তরী হয়েছেন । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের নোয়াখালীর চাটখিল এলাকায় । সানজিদা আক্তার নামে ওই বধূর স্বামী মিজানুর রহমান স্বপনের অনুমান তার স্ত্রী হিন্দু প্রেমিকের সঙ্গে ভারতে পালিয়েছে । তিনি সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে হাউহাউ করে কাঁদতে কাঁদতে হাত জোর করে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদব জানান যেন তার বউকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয় ।
জানা যায়,নোয়াখালীর চাটখিল এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান স্বপনের বাবা অনেক দিন আগেই মারা গেছেন । বাবার মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই তার মায়েও মৃত্যু হয় । ভিন দেশে শ্রমিকের কাজ করতেন স্বপন । একই এলাকার মেয়ে সানজিদা আক্তারের সঙ্গে বছর খানেক আগে তার দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল । বিয়ের পর থেকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন ।
সংবাদ মাধ্যমের কাছে মিজানুর রহমান স্বপন বলেন, ‘বিয়ের পর জানতে পারি শুভ্রদ্বীপ ওরফে শ্রীমন্ত নামে এক যুবকের সঙ্গে আমার স্ত্রীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল । ছেলেটির মামার বাড়ি নাটোরে । তবে সে কর্মসূত্রে ঢাকায় থাকতো । ওই হিন্দু ছেলের সঙ্গে সম্পর্কের কথা শোনার পর থেকেই সানজিদার উপর নজর রাখতে শুরু করি । তবে সে বাড়ির বাইরে বিশেষ বের হত না । কেবল বাড়িতে বসে স্মার্টফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করত । জিজ্ঞাসা করলে বলতো ‘গেম খেলছি’ ।’
স্বপন বলেন,’আমি রোজা রেখেছি । সারাদিনের উপবাসের পর খুব ক্লান্তি লাগে । তাই সকালে ঘুম থেকে উঠতে আমার দেরি হয় । রোজার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৪ মার্চ শনিবার সকাল ৭ টায় আমার ঘুম ভাঙলে দেখি আমার স্ত্রী বাড়িতে নেই । এরপর সমস্ত আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি যাই,কিন্তু সানজিদার কোনো খবর পাইনি । আমি দীর্ঘ ৩-৪ দিন ধরে পাগলের মত বউকে খুঁজছি ।’
তিনি আরও বলেন,’বউ আমায় প্রায়ই বলতো যে সে ভারতে চলে যাবে । ওই হিন্দু ছেলে তাকে ভারতে নিয়ে যেতে পারে । আপনারা একটা মুসলমান মেয়েকে আটকান । আপনাদের কাছে আমার এটাই অনুরোধ । ভারত যেতে কোনো পাসপোর্ট লাগে না । প্রশাসনকে টাকা দিলেই যাওয়া যায় । বউ আমায় বলেছে যে তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেড়িয়ে ভারত চলে যাবে । আমি যে ভারতে গিয়ে বউকে খুঁজবো, তারও উপায় নেই । কারন আমার কাছে কোনো টাকা পয়সাও নেই । যা কিছু টাকা ছিল সব বিয়েতে খরচ হয়ে গেছে ।’
তিনি বলেন,’ছোট থেকে আমার বাপ-মা নাই । ফের বিয়ে করার মত আর্থিক সামর্থ্য নেই আমার ।’ এই বলে তিনি দু’হাতের তালুতে মুখ ঢেকে হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করেন । শেষে তিনি ফের বলেন,’একটা মুসলমান মেয়ে একজন হিন্দু ছেলের সঙ্গে পালিয়েছে । পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ আমার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনুন ।’।