প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ জানুয়ারি :
কচুরিপানা নিয়ে হেলাফেলা করার দিন শেষ হতে চলেছে।এইবার কচুরিপানা দিয়েই তৈরি হবে নজরকাড়া হস্তশিল্প সামগ্রী । দুই মাস ধরে প্রশিক্ষণ নেওয়া পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর স্বয়ম্ভর গোষ্ঠির মহিলারা স্বনির্ভরতার লক্ষে ওইসব হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরী করবেন।এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ নিজে উদ্যোগ নিয়ে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বড়কোবলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মহিলাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।প্রশিক্ষণ কতটা সার্থক হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে সোমবারমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌছান । সেখানে তাঁর সঙ্গেই বিডিও দেবব্রত জানা ও রিজিওনাল হ্যান্ডিক্র্যাফটস প্রমোশন অফিসার পীযূস সিংহ ও উপস্থিত থাকেন ।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এদিন বলেন,’কচুরিপানা পরিবেশ বান্ধব।সেই কচুরিপানা দিয়ে হস্তশিল্প তৈরি করার জন্য প্রথম পর্যায়ে কুড়িজন মহিলাকে বেছে নেওয়া হয় । তাঁদের ২ মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।সবকিছু খতিয়ে দেখে তাঁদের আরও দু-সপ্তাহ প্রশিক্ষন দেওয়ার সিদ্ধান্ত এদিন নেওয়া হয় ।তারপর স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ওই মহিলারাই কচুরিপানা দিয়ে নজরকাড়া নানান হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরী
করবেন। উৎপাদিত সেইসব হস্তশিল্প সামগ্রী বিপণনের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি কালনা,নবদ্বীপ ও বর্ধমান শহরেও তা বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে ।’ মন্ত্রী জানিয়ে দেন,’কচুরিপানা দিয়ে তৈরী হস্তশিল্প সামগ্রীর জন্য তিনি নিজে ‘সেলসম্যানের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন ।’
পুকুর কিংবা জলাশয়ে কচুরিপানা ভরে থাকলে তা কিভাবে কাজে লাগানো যায় এতদিন সেই ভাবে কেউ মথা ঘামাননি । কিন্তু কচুরিপানা দিয়েও যে হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করা যায় সেই দিশা প্রথম দেখায় পূর্বস্থলীর যুবক রাজু বাগ।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বাঁশদহ বিল সহ এলাকার খালবিলে জন্মানো কচুরিপানা দিয়ে রাজু নজরকাড়া ডিজাইনের ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরীকরে তাক লাগিয়ে দেয়। কচুরিপানা ভালোভাবে শুকিয়ে সেগুলি দিয়ে সে বিভিন্ন ডিজাইনের ঝুড়ি,ম্যাট,ব্যাগ সহ ঘর সাজানোর জিনিস তৈরীকরে দেখায়। যুবক রাজুর এই শিল্প কীর্তি এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের তা নজরে আসতেই তিনি নড়েচড়ে বসেন। কিছুদিন আগে খালবিল ও চুনোমাছ উৎসবে রাজুর তৈরী করা সেই হস্তশিল্পের একটি প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করে দেন মন্ত্রী।কচুরিপানা দিয়ে তৈরী হস্তশিল্পের সেই কাজ শিখে এলাকার মহিলা ও অন্যান্যরা যাতে স্বনির্ভর হতে পারবে ধরে নিয়ে মন্ত্রী তাঁর বিধানসভা এলাকায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও খোলান । ‘খালবিল ওয়েলফেয়ার হোসাইটি’ ওই প্রশিক্ষণ শিবিরের চালানোর যাবতীয় খরচ বহন করে ।।