এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১০ মে : কেতুগ্রামের শ্রীপুর গ্রামের বিজেপির কর্মী বলরাম মাজিকে(২২) বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃসংসভাবে খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত সাহিদুল আলম মোল্লা ওরফে তপন মোল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ । ধৃত ব্যক্তি তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত কেতুগ্ৰাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য । রবিবারে রাতে গ্রেফতারের সোমবার ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ।
ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় । অভিযোগ, ওইদিন শ্রীপুর গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের বেশকিছু কর্মীসমর্থক রড, লাঠি, ধারালো অস্ত্র ও বোমা প্রভৃতি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বলরাম মাঝির বাড়িতে চড়াও হয় । তারপর তারা বলরামকে বাড়ির কিছুটা দুরে শ্রীপুর দিঘির পাড়ে তুলে নিয়ে যায় । সেখানে ওই যুবককে নির্মমভাবে পেটানো ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ । বলরাম রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন । তিনি মারা গেছেন ভেবে তাঁকে সেখানে ফেলে রেখে দিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা ।
এরপর পরিবারের লোকজন তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখান থেকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় । অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাতেই বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । কিন্তু পরের দিন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বিজেপি কর্মী বলরাম মাঝির । নিহত বিজেপি কর্মীর মা টুম্পা মাজির অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে যখন গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল তখন দুষ্কৃতিদল বাধা দেয় । ফলে চিকিৎসা শুরু হতে অনেক দেরি হয়ে যায় । তিনি বলেন, ‘ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে আমার ছেলেটা বেঁচে যেত । কিন্তু ওরা তা হতে দিল না । আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই ।’
জানা গেছে, ঘটনার পর গত শুক্রবার টুম্পা মাজি এনিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সাহিদুল আলম মোল্লাসহ পাঁচ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে কেতুগ্রাম থানায় এফআইআর দায়ের করেন । বাকি চার অভিযুক্তরা হল সাহানুর আলম মোল্লা, মেহেরজান শেখ, সাজাহান শেখ ও কামালুদ্দিন শেখ । টুম্পাদেবীর অভিযোগ, আক্রোশবশত পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে । সেই সঙ্গে ওইদিন তাঁদের বাড়িসহ আশপাশের অনেক বাড়িতেও ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর ।
অভিযোগ দায়ের হতেই ওইদিন রাতে কামালুদ্দিন শেখ ওরফে হিঙুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এরপর রবিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় সাহিদুল আলম মোল্লাকে । বাকি অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবার ও পরিজনেরা ।।