এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,১৪ ডিসেম্বর : পার্বত্য চট্টগ্রামে হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথধাম মহাতীর্থের পাদদেশে তীর্থভূমির অধীন ২ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় গতকাল শনিবার গরু জবাই করে বনভোজনের আয়োজন করেছিল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জামাত ইসলামি ৷ দীর্ঘ দিন ধরেই চন্দ্রনাথধামের আশেপাশে মসজিদ নির্মান করে অশান্তি পাকাতে চাইছে বাংলাদেশের উগ্র ইসলামি সংগঠনগুলি । তারই ধারাবাহিকতায় জামাত ইসলামির জঙ্গিদের গরু জবাই করে বনভোজনের আয়োজন মূলত হিন্দুদের পবিত্র তীর্থভূমির পরিবেশ ও ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার উদ্দেশ্যেই বলে মনে করা হচ্ছে ।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বনভোজনটির আয়োজন করেছিল উপজেলা জামাত ইসলামির প্রাক্তন আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের এমপি প্রার্থী আনোয়ার ছিদ্দিকী, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান, সেক্রেটারি মহম্মদ আবু তাহেরসহ জামায়াতের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আরও প্রায় এক হাজার উগ্রপন্থী অংশ নেয় বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানস্থলে গরু জবাই করে অংশগ্রহণকারীদের খাবার পরিবেশন করা হয়। পাশাপাশি আজান দেওয়া হয়, সম্মিলিতভাবে নামাজ পড়া হয় এবং প্ররোচনামূলক ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব কার্যক্রম চন্দ্রনাথধামের তীর্থভূমির ঠিক কাছেই অনুষ্ঠিত হওয়ায় এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকশ’ হিন্দু ভোটারকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে পবিত্র তীর্থভূমির নিকট গরু জবাই, আজান ও নামাজ এবং ইসলামী গান-শ্লোগান শুনে মানসিকভাবে আহত ও হতাশ হন বলে জানান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানানোর সাহস পাননি। এ বিষয়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বলেন, চন্দ্রনাথধাম চট্টগ্রাম তথা দেশের হিন্দুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও আবেগের স্থান। এই এলাকায় যেকোনো সামাজিক বা রাজনৈতিক আয়োজনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা ও তীর্থভূমির মর্যাদা রক্ষা করা জরুরি। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং তীর্থভূমি ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘিরে সীতাকুণ্ড এলাকায় ধর্মীয় সহাবস্থান ও তীর্থভূমির সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।।

