এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেঙ্গালুরু,১৫ মার্চ : হিজাব সমর্থনকারীদের রিট পিটিশন খারিজ করে দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট । মঙ্গলবার কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রিতু রাজ অবস্থির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিয়ে বিতর্ক সংক্রান্ত পিটিশনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন । আদালত বলেছে যে, ‘হিজাব ইসলামী বিশ্বাসের একটি অপরিহার্য অনুশীলন নয় ।’ তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার অনুমতি চেয়ে মুসলিম ছাত্রীদের দ্বারা দায়ের করা সমস্ত আবেদন খারিজ হয়ে যায় এদিন । রায় ঘোষণার পর আবেদনকারী মুসলিম পড়ুয়ারা জানিয়েছেন এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন ।
প্রসঙ্গত,কর্নাটকের উদুপির একটি প্রি ইউনিভার্সিটি কলেজের কিছু মুসলিম ছাত্রী হিজাব পরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছিল । কলেজ প্রশাসনের মতে, হিজাব কলেজ ইউনিফর্মের অংশ নয় এবং তাই ক্লাসে পরা যাবে না বলে তাদের ভর্তি নিতে অস্বীকার করে । এরপর থেকে বোরখা পরে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা । পালটা গেরুয়া বস্ত্র পরে পথে নামে হিন্দু ছাত্রছাত্রীরাও । এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামে রাজ্য সরকার ।
গত ২৬ জানুয়ারি কর্নাটক সরকার দ্বারা বিশেষ কমিটি একটি নির্দেশিকা জারি করে জানায় কোনও ধর্মীয় পোশাক নয়,কেবলমাত্র কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে হবে ছাত্রছাত্রীদের । এই নির্দেশের বিরুদ্ধে কর্নাটক হাই কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করে উদুপির ওই প্রি ইউনিভার্সিটি কলেজের কিছু মুসলিম ছাত্রী । গত ১০ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক হাই কোর্ট অন্তর্বর্তী রায়ে জানায়, অন্তিম রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও প্রকার ধর্মীয় পোশাক পরা যাবে না । শেষ পর্যন্ত হিজাব পরা বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন নয় বলে এদিন রায় দিল কর্নাটক হাইকোর্ট ।
এদিক্র এদিন ‘হিজাব বিতর্ক’-এর রায় ঘোষণার আগে রাজ্য জুড়ে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদার করা হয়েছে । হাসান, চিক্কাবল্লাপুরা, কোলার, ধারওয়াড় এবং দাভাঙ্গের প্রভৃতি জেলাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে । বেঙ্গালুরু শহরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা এক সপ্তাহের জন্য বলবৎ থাকবে । শহর জুড়ে ১০ হাজারের বেশি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে । সঙ্গে রয়েছে অতিরিক্ত রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স এবং সিটি সশস্ত্র রিজার্ভ ফোর্স । বিজয়পুরায় স্কুল,প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ডিগ্রি কলেজ বা অন্যান্য অনুরূপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেট থেকে ২০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যে কোনও ধরণের জমায়েত,আন্দোলন বা প্রতিবাদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে । উত্তর কন্নড় জেলার স্কুল ও কলেজের বাইরেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ।।