এইদিন ওয়েবডেস্ক,মরক্কো,০৫ জুন : আফ্রিকার একটি ইসলামিক দেশ মরক্কোতে বকরিদ দিবসে কোরবানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মরক্কোর ৯৯ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুলতান ষষ্ঠ মোহাম্মদ। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনা হচ্ছে। মরক্কো তার পশু বাজার বন্ধ করে দিয়েছে। রাজা তার আদেশে ছাগল সহ কোনও পশু কোরবানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই আদেশ কার্যকর করা হয়েছে।
মরক্কোয় পশু কোরবানি কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ?
রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ এই নিষেধাজ্ঞার পিছনে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সংকটের কথা বলেছেন। গত ৭ বছর ধরে দেশে তীব্র খরা চলছে। ফসল উৎপাদন হচ্ছে না। পশুরা পশুখাদ্য ও জলের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর ফলে পশুর সংখ্যা ৩৩ শতাংশ কমেছে। একই সাথে পশুখাদ্যের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে কৃষক ও গবাদি পশুপালকদের উপর প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া মাংসের দাম বেড়েছে। এর ফলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের জন্য ‘কোরবানির’ ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ মরক্কোর ধর্মীয় প্রধানও। তিনি বলেন যে,চলতি বছর দেশে চরম।দুর্দশার পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এমন পরিস্থিতিতে বকরিদে কুরবানী না করা ইসলামের নীতিমালা অনুসারে। বাদশাহর মতে, ইসলামে কুরবানীকে উত্তম বলে মনে করা হয় কিন্তু তা বাধ্যতামূলক নয়। তাই ‘প্রতীকী কুরবানী’ও দেওয়া যেতে পারে।
পশু কেনা-বেচা বন্ধ
পশু কেনা-বেচা বন্ধ করার জন্য পশুর বাজার এবং হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সারা দেশের গভর্নর এবং স্থানীয় প্রশাসনকে এটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বকরিদের আগে যে বাজারগুলিতে পশু কেনা-বেচা হত, সেগুলি এখন শুনশান । মরক্কোর এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি উদাহরণ। চলতি বছরের শুরুতে, রাজা মরক্কোর জনগণকে ঐতিহ্যবাহী কুরবানি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যাতে মাংসের ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং পশুপালন বৃদ্ধি পায়।
অস্ট্রেলিয়া থেকে ১ লক্ষ ভেড়া আমদানি করা হচ্ছে
মরক্কো মাংস এবং পশুপালনের আমদানির উপর কর কমিয়েছে। মরক্কো এখন অস্ট্রেলিয়া থেকে ১ লক্ষ ভেড়া আমদানি করতে চলেছে। দেশে মাংসের ঘাটতি মেটাতে এটি করা হচ্ছে। মরক্কো সরকার ৬.২ বিলিয়ন দিরহাম অর্থাৎ ৫৩২.৬৬ কোটি টাকার একটি কর্মসূচি শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য হল পশুপালকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং পশুপালনের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। ক্রমাগত পশু হত্যার কারণে তাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। মানুষ সাধারণত সুলতানের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে অনেক মৌলবাদী সংগঠন এটিকে ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে।।

