একদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৯ নভেম্বর : গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আসার পর থেকে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর সংখ্যাগুরু মুসলিমদের অবর্ণনীয় অত্যাচার শুরু হয়েছে৷ এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদপত্রে তোলপাড় চলছে । অথচ দীর্ঘ দু’মাসের অধিক সময় ভারতের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল সিপিএম বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে একটা শব্দ খরচ করেনি । সাম্প্রতিক সময়ে হিজবুত তাহরীত, জামাত ইসলামি আর বিএনপির মত জঙ্গি সংগঠনগুলি দ্বারা হিন্দুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা তীব্র করার পর যখন বিশ্বের বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়েছে, তখন ঘুম ভেঙেছে ভারতের বামপন্থী রাজনৈতিক দল সিপিএমের । তবে তারা হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বাংলাদেশের তদারকি সরকারের সমালোচনা করলেও মুসলিমদের প্ররোচনা দেওয়ায় অভিযুক্ত করেছে ভারতের ‘হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি বন্য ও উস্কানিমূলক অপপ্রচার’কে । সিপিএমের এই প্রকার ‘ভন্ডামি’তে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ।
বৃহস্পতিবার(২৮ নভেম্বর ২০২৪) কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী) পলিট ব্যুরোর লিখিত বিবৃতি এক্স-এ শেয়ার করেছে টাইমস অ্যালজেবরা ৷ ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী) পলিট ব্যুরো প্রেস কমিউনিক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শীর্ষক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি উদ্বেগ সৃষ্টি করে চলেছে। বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে যা তাদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এমন এক সময়ে যখন মৌলবাদী শক্তিগুলো একটি সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির জন্য সক্রিয়, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এখনও সাম্প্রদায়িক হামলা দমনে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি। শান্তি ও সম্প্রীতির স্বার্থে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে বিলম্ব না করে কাজ করতে হবে।’
এরপর ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণ করে লেখা হয়েছে,’এই প্রসঙ্গে, ভারতের অভ্যন্তরে, হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি বন্য ও উস্কানিমূলক অপপ্রচারে লিপ্ত। তাদের উদ্দেশ্য সন্দেহজনক কারণ এই শক্তিগুলোই মুসলিমদের প্ররোচনার পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের উপর লক্ষ্যবস্তু হামলার জন্য দায়ী। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে বিভেদমূলক রাজনীতি বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর ।’
সিপিএমের এই প্রকার ভন্ড রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করে অভ্রনীল হিন্দু লিখেছে, ‘কমিউনিস্টরা মানবতার শত্রু এবং ইসলামী জঙ্গিদের বন্ধু।’ রাজীব লোচন ত্রিবেদীর প্রতিক্রিয়া,’সিপিএম কংগ্রেস এবং ইন্ডি ঠগ বন্ধনের আখ্যান সর্বদা হিন্দুদের বিরুদ্ধে যারা যেকোন ধর্মের চেয়ে অহিংস অনুসারী। আসলে সিপিএম কংগ্রেসের গোপন বন্ধনের লুকানো এজেন্ডা হল তাদের ভোটব্যাঙ্কের জন্য জিহাদিদেরকে সমর্থন করা এবং অন্য কিছু নয়, বাহ আবার এই নির্বোধদের চরিত্র ফাঁস করে দিল ৷’ শশাঙ্ক মিশ্র লিখেছেন,’নির্বাচনে সম্পূর্ণ হোয়াইটওয়াশের পরও বিরোধী দলগুলো কিছুই শিখছে না এবং সনাতন ধর্মকে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। জানিনা তারা আরো কত নিচে নামতে চায়।’
নাট বোল্ট নামে এক এক্স ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া হল,’সিপিএমের বক্তব্যকে ধিক্কার জানাই ! বাংলাদেশের ইসলামপন্থী মৌলবাদী, যারা হিন্দু গণহত্যা, মন্দির ধ্বংস এবং নেতাদের গ্রেপ্তারে জড়িত, তাদের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর সাথে তুলনা করা বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশে হিন্দুরা যে অত্যাচারের সম্মুখীন হয় তা উপেক্ষা করে মৌলবাদীদের খুশি করার ইতিহাস সিপিএমের রয়েছে। হিন্দুত্ব মানে সংস্কৃতি, একতা এবং জাতীয় গর্ব রক্ষার জন্য-সংখ্যালঘুদের সন্ত্রাস করা নয়। এই মিথ্যা সমতুল্যতা সিপিএমের হতাশা এবং বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব দেখায়। ভারতে রাজনৈতিক পয়েন্ট স্কোর করতে ইসলামপন্থী অপরাধকে হোয়াইটওয়াশ করা বন্ধ করুন!’