দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৪ নভেম্বর : ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে স্ত্রীর একটা শাড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল স্বামী । স্বামীকে বাঁচানোর জন্য কাস্তে দিয়ে শাড়ি কাটতে গিয়েছিলেন স্ত্রী । শাড়ির ফাঁস কেটে স্বামীকে তিনি বাঁচিয়ে ফেললোও কাস্তের অগ্রভাগে কেটে যায় তার গলা । অবশ্য তাড়াহুড়ায় নিজের হাতও কেটে ফেলেন ওই মহিলা । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার মুলটি গ্রামের ঘোষপাড়ায় । অবশ্য গৌতম ঘোষ(৩২) নামে ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তড়িঘড়ি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার প্রাণ বেঁচে যায় । চিকিৎসা করানো হয়েছে গৌতমবাবুর স্ত্রী বৃষ্টি ঘোষেরও । এনিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে ।
পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে বন্ধুদের সাথে মদপান করে বাড়ি ফেরার সময় গৌতম ঘোষের পকেটে ১৫০ টাকা ছিল । ওই টাকায় আজ মদ্যপান করার পরিকল্পনা ছিল তার । কিন্তু স্বামীর সেই পরিকল্পনা আন্দাজ করে রাতেই পকেট থেকে টাকাটা বের করে নিজের কাছে রেখে দেন বৃষ্টিদেবী । আজ সকালে প্যান্টের পকেটে ওই টাকা দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যান গৌতম ঘোষ । বুঝতে পারেন যে স্ত্রীই টাকাটা সরিয়েছে । এরপর তিনি স্ত্রীকে টাকাটা ফেরত দেওয়ার জন্য জোর করেন । কিন্তু স্বামী ফের মদ্যপান করবে এই আশঙ্কায় টাকা ফেরত দেননি বৃষ্টিদেবী । এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা হয় । তারই মাঝে ক্ষিপ্ত হয়ে একটা ঘরে ঢুকে স্ত্রীর একটা শাড়ি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ফলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন গৌতমবাবু । যদিও বৃষ্টিদেবী তৎপরতার সঙ্গে কাস্তে দিয়ে শাড়ি কেটে স্বামীকে নামিয়ে ফেলেন । আর তখনই কাস্তের অগ্রভাগের ধারাল অংশে গৌতমবাবুর গলা কেটে যায় । যদিও চিকিৎসকরা জানিয়েছে তিনি বিপদমুক্ত ।
জানা গেছে,গৌতম ঘোষ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ।বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, পাঁচ বছরের ছেলে এবং বাবা মা । কর্মসূত্রে গুজরাটের সুরাটে থাকেন গৌতমবাবু । অল্পসল্প জমিজমাও রয়েছে তার । জমির ধান তোলার জন্য মাস দুয়েক আগে তিনি বাড়ি আসেন । কিন্তু দুর্গাপূজার সময় থেকেই তিনি মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন । পরিবারের বহু নিষেধ সত্ত্বেও তার মদ্যপান বন্ধ হয়নি । প্রায় প্রতিদিন রাতে মদ্যপান করে বাড়ি ফিরছিলেন গৌতমবাবু । বৃহস্পতিবার রাতেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি । আর তার এই মদের নেশার কারনেই গোটা পরিবারকে আজ এই প্রকার অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় ।।