এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া,২৯ ডিসেম্বর ঃ একে কোভিড পরিস্থিতি তার উপর শীতকালের বন্ধ রয়েছে রক্তদান শিবির । ফলে রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কগুলিতে । এই পরিস্থিতিতে রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে মুমূর্ষু রোগীর আত্মীয়দের । যেমন মঙ্গলবার নদীয়া জেলার বাসিন্দা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত জান্নাতুন খাতুন নামে ১৪ বছরের কিশোরীকে কাটোয়া হাসপাতালে রক্ত দিতে এসে বিপাকে পড়তে হয়েছিল তাঁর মা-বাবাকে । যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলার দাঁইহাট শহরের বাসিন্দা তনুশ্রী দেবনাথ নামে এক গৃহবধূ রক্তদান করলে প্রাণ বাঁচে ওই কিশোরীর । তনুশ্রীদেবীর এই মানবিকতায় আপ্লুত কিশোরীর পরিবার । পাশাপাশি দাঁইহাটের ওই গৃহবধুর এই প্রকার মানসিকতার তারিফ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।
নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ থানার ছবিপুর গ্রামে বাড়ি জান্নাতুন খাতুনের । জানা গেছে, ছোট থেকেই সে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত । ২৫ দিন অন্তর তাকে রক্ত দিতে হয় । কিশোরীর বাবা মজিদ শেখ জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের রক্তে গ্রুপ এ নেগেটিভ । এদিন সকালে মেয়েকে রক্ত দিতে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে এনেছিলেন । কিন্তু কাটোয়া হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন মেয়ের গ্রুপের রক্ত নেই ৷ তিনি বলেন, ‘এই কথা শোনার পর কি করবো বুঝতে পারছিলাম না । প্রচন্ড দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম । তখন একজন কাটোয়া মহকুমা ভলেন্টিয়ার্স ব্লাড ডোনার্স আ্যসোশিয়েশনের কাছে বিষয়টি জানাতে বলেন । তাঁর কথা মত ওই সংস্থায় বিষয়টি জানাই । শেষে ওই সংস্থার মাধ্যমে খবর পেয়ে দাঁইহাটের বাসিন্দা তনুশ্রীদেবী ব্লাডব্যাঙ্কে এসে রক্ত দিয়ে যান ।’
জানা গেছে, দাঁইহাটের গৃহবধু তনুশ্রী দেবনাথের রক্তের গ্রুপ এ নেগেটিভ । কাটোয়া মহকুমা ভলেন্টিয়ার্স ব্লাড ডোনার্স আ্যসোশিয়েশনের তরফ থেকে প্রথমে তনুশ্রীদেবীর স্বামী পেশায় ব্যবসায়ী মৃণাল দেবনাথকে বিষয়টি জানানো হয় । ঘটনার কথা কানে যেতেই বাড়ির কাজ ফেলে রেখে স্বামীর সঙ্গে কাটোয়া হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডব্যাঙ্কে এসে রক্ত দিয়ে যান তনুশ্রীদেবী । সেই রক্ত দেওয়া হয় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কিশোরী জান্নাতুনকে।
কিশোরীর মা জহুরা বিবি বলেন, ‘তনুশ্রীদেবীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই । আজ ওনার জন্যই আমার মেয়ের প্রান বাঁচল । আল্লাহ ওনার মঙ্গল করুন ।’।