এইদিন ওয়েবডেস্ক,কানপুর,০৪ ডিসেম্বর : করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ভয়ে স্ত্রী,এক ছেলে ও এক মেয়েকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে খুন করে বেপাত্তা হয়ে গেলেন মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের কল্যাণপুর এলাকায় । অধ্যাপক সুশীল সিং নামে ওই ব্যক্তি শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও সন্তানদের খুন করার পর তাঁর ভাইকে হোয়াটসঅ্যাপে ঘটনার কথা জানান । পরে খবর পেয়ে পুলিশ কল্যাণপুর জোনের ডিভিনিটি অ্যাপার্টমেন্ট গিয়ে সুশীল সিংয়ের স্ত্রী চন্দ্রপ্রভা (৪৮), ছেলে শিখর সিং (১৮) ও মেয়ে খুশি সিং (১৬)-এর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পায় । সেই সঙ্গে ওই অধ্যাপকের হাতে লেখা একটি নোট উদ্ধার করে পুলিশ । তাতে তিনি লিখেছেন, ‘ওমিক্রন সবাইকে মেরে ফেলবে । আর লাশ গুনতে চাই না ।আমার অবহেলার কারণে আমি আমার ক্যারিয়ারের এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছি যে যেখান থেকে বেড়িয়ে আসা অসম্ভব । আমার কোন ভবিষ্যৎ নেই। তাই আমি সচেতনভাবে আমার পরিবারকে মেরে করে নিজেকে শেষ করছি । এর জন্য অন্য কেউ দায়ী নয় ।’
সেই সঙ্গে তিনি লেখেন, ‘আমি দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছি । আমার কোন ভবিষ্যৎ নেই । তাই এ ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই । আমি আমার পরিবারকে কষ্টে রেখে যেতে পারি না । তাই সবাইকে মুক্তি দিলাম । এক মুহুর্তের মধ্যে ওদের সব কষ্ট দূর করে দিচ্ছি । আমার অনুপস্থিতিতে কেউ কষ্টে থাকুক আমি চাই না । আমার আত্মা যেন আমাকে ক্ষমা না করে । বিদায়…। এরপর তিনি লেখেন, ‘চোখের দুরারোগ্য রোগের কারণে এই পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে । পড়াশোনা আমার পেশা । চোখই যদি না থাকে তাহলে থেকে কি করব ?’
অধ্যাপক সুশীল সিং রামা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান । তিনি কল্যাণপুর এলাকার ডিভিনিটি হোম অ্যাপার্টমেন্টের পঞ্চম তলায় ৫০১ নম্বর ফ্ল্যাটে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন । হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে খুন করার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ৫.৩২ মিনিটে অধ্যাপক ড. সুশীল তার ছোট ভাই সুনীল সিংকে হোয়াটস অ্যাপে একটি মেসেজ করেন । তাতে লেখেন, ‘আমি হতাশাগ্রস্থ হয়ে চন্দ্রপ্রভা, শিখর, খুশিকে খুন করেছি ।’ এই মেসেজ দেখার পর হতবাক হয়ে যান রুরা পিএইচসি-তে কর্মরত ভাই সুনীল সিং । মেসেজ দেখেই ডাঃ সুনীল তৎক্ষণাৎ ডিভিনিটি হোম অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে যান । গিয়ে দেখেন ফ্ল্যাট সেন্ট্রাল লক করা রয়েছে। এরপর তিনি রক্ষীদের সহায়তায় দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকলে ৩ জনের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন । পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ কমিশনার অসীম অরুণ, অতিরিক্ত কমিশনার আনন্দ প্রকাশ তিওয়ারিসহ পুলিশবাহিনী । এরপর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । তবে এদিন পর্যন্ত সুশীল সিংয়ের কোনও হদিশ করতে পারেনি পুলিশ ।।