এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,২০ জানুয়ারী : বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলি শিশুদের যৌন নির্যাতনের কেন্দ্র এবং বধ্যভূমি হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠছে । বাংলাদেশের একটি মাদ্রাসায় ফের এক শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে । এবারে ঘটনাস্থল চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের কালিবাড়ি এলাকার দারুত তাহফিজ মডেল হাফিজিয়া মাদ্রাসা । শুক্রবার সকাল ৩ টে নাগাদ মাদ্রাসা শিক্ষকের ঘরের জানালায় থেকে মুহাম্মদ ওমাইরের (৯) নামে এক শিশুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ । স্থানীয় আনোয়ারা থানার ওসি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বারশত ইউনিয়নের একটি বেসরকারি মাদ্রাসা থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। মাদ্রাসা থেকে সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজও পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে । যদিও পুলিশের এই দাবি মেনে নিতে পারছেন না মৃত শিশুর পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা । শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন চালিয়ে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে ।
জানা গেছে,উমাইর উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের আইরমঙ্গল মাইজপাড়া মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে মুহাম্মদ ওমাইরের । সে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল । মাদ্রাসার চারতলা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে তিনজন ‘হুজুর’ বালক-বালিকা নাম দিয়ে মাদ্রাসাটি চালাচ্ছে । দ্বিতীয় তলায় বালিকা আর তৃতীয় তলায় বালক পড়ুয়াদের থাকার ব্যবস্থা করা আছে । মাদ্রাসার সিসি ক্যামরায় পুলিশ দেখতে পায় যে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ এমরানের ঘরে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওমাইর প্রবেশ করে । এরপর ১০টার দিকে জানালার সঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
ওমাইরের সহপাঠী মোহম্মদ আনাস (৯) সংবাদমাধ্যমকে বলেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার সকাল ৭টায় ওমাইর আমাকে বলেছে সে মরে যাবে। কেন মরে যাবে প্রশ্ন করলে সে জানায়, আমি বাড়িতে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বড় হুজুর আমার আম্মুকে ফোন দিচ্ছে না, তাই মরে যাব।
মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ আবদুর রহমান বলেন, মাদ্রাসাটিতে ৮৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ওমাইর নাজারা বিভাগের ছাত্র ছিল । এক সপ্তাহ আগে সে এখানে ভর্তি হয়। সকালে সে সবার সঙ্গে টিফিনও করেছে। এরপর ১০টার দিকে মাদ্রাসার শিক্ষকের ঘরের জানালার সঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। তার দাবি,সেই সময় ওই ঘরে কেউ ছিল না। পরে আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পুলিশকে খবর দিই।।