এইদিন ওয়েবডেস্ক,গোপালগঞ্জ(বাংলাদেশ),০২ এপ্রিল : প্রায় এক মাস আগে কিশোরী মেয়েকে রাস্তা থেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে এক মুসলিম যুবক । থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখনো মেয়েকে উদ্ধারের আগ্রহ দেখাচ্ছে না পুলিশ । এদিকে উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন দোকানটিতেও রহস্যজনকভাবে আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়ে গেছে । মেয়ের চিন্তা আর অভাব অনটনে কার্যত অর্ধ উন্মাদ হয়ে গেছেন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া উপজেলার হীরন ইউনিয়নের তাড়াশী গ্রামের বাসিন্দা গোসাই কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী ।
তাড়াশী গ্রামের বাসিন্দা গোসাই কর্মকারের দুই মেয়ে ও এক ছেলে । একটি ছোট্ট কামারশালা ছিল তাঁর । সেখানে লোহার দা-বটি, ছুরি-কাঁচি, শাবল-কোদাল তৈরি করে সেই উপার্জনে তিনি স্ত্রী,তিন সন্তানকে নিয়ে ৫ জনের সংসার অতিকষ্টে চালাতেন । সংসারে অভাব থাকলেও মোটামুটি ছন্দে চলছিল জীবন । কিন্তু পাশ্ববর্তী মাঝবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মতিয়ার ফকিরের ছেলে সাকিব ফকির (২২) সব কিছু লন্ডভন্ড করে দেয় ।
মাস খানেক আগে গোসাই কর্মকারের বড় মেয়ে পূজা কর্মকারকে (১৭) রাস্তা থেকে অপহরণ করে ওই মুসলিম যুবক । জানা যায়, পূজা কোটালিপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের একাদশশ্রেণীর ছাত্রী । চলতি বছরের ২৫ মার্চ বিকাল ৫ টা নাগাদ সাকিব তার সঙ্গীসাথীদের সহযোগিতায় পূজাকে তার বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় । তারপর থেকে মেয়েটির আজ পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি ।
এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে এলাকার প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হন গোসাইবাবু । কিন্তু তার মেয়েকে উদ্ধারের বিষয়ে তাদের মধ্যে বিশেষ উৎসাহ দেখা যায়নি । শেষে গত ৭ এপ্রিল কোটালিপাড়া থানায় একটি অপহরণের মামলা রজু করতে গিয়েছিলেন হতভাগ্য বাবা । কিন্তু পুলিশ অপহরণের মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে তাঁকে বাধ্য করে বলে অভিযোগ । জিডি করার পরেও মেয়েকে উদ্ধারের বিষয়ে এযাবৎ পুলিশের মধ্যে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি ।
জানা গেছে,গোসাই কর্মকার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর গত ২২ এপ্রিল রাতে হীরন ইউনিয়নের ঘাঘর বাজারে তাঁর দোকানে রহস্যজনকভাবে আগুন লেগে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় । সেই আগুন ছড়িয়ে ভস্মীভূত হয়ে যায় আশপাশের আরও ৩৪ টি দোকান । একদিকে মেয়েকে উদ্ধারের চিন্তা, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের দু’বেলার অন্নসংস্থান করতে গিয়ে কার্যত অর্ধ উন্মাদ হয়ে গেছে মধ্যবয়স্ক গোসাই কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী ।
গোসাইবাবু কান্না ভেজা গলায় বলেন, মেয়েকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ কোনো চেষ্টাই করছে না । এদিকে উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন দোকানটিও নেই,রোজগার কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে । ফলে আদালতে মামলা করার সামর্থ্য আমার নেই ।’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু হয়ে জন্মানো অভিশাপ ।’।
ছবি : অপহৃতা কিশোরী ।