এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩০ জুলাই : ফেসবুকের প্রেমিকের সঙ্গে কিশোরী মেয়ের সম্পর্কে মেনে নিতে পারেননি কলকাতার ঠাকুরপুকুর এলাকার বাসিন্দা চায়না স্যান্যাল (৫৪) ও বাদল স্যানাল (৬০) নামে এক দম্পতি । মেয়ের এই সম্পর্কের সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করেছিলেন চায়নাদেবী । তিনি এনিয়ে মেয়েকে বকাঝকাও করেছিলেন । সেই আক্রোশে মা’কে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে চায়নাদেবীর ১৪ বছরের মেয়ে এবং মেয়ের কিশোর প্রেমিক । কিশোরীর প্রেমিকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণা জেলার মধ্যমগ্রামে ।
গভীর রাতে মা-বাবা যখন নিজের ঘরে ঘুমচ্ছিলেন, সেই সময় প্রেমিককে সাথে নিয়ে নিজের মায়ের মুখে বালিশ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করে কিশোরী । মেয়ের প্রেমিক বাদল স্যানালকে ধাক্কা দিয়ে খাট থেকে নিচে ফেলে দেয় । পরে নাবালক প্রেমিক যুগল বাদল বাবুকেও মুখ খুললে হত্যার হুমকি দিয়ে চুপ করিয়ে দেয় । চায়নাদেবীর ঘাতক মেয়ে ও তার প্রেমিককে পাকড়াও করার পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কলকাতার ঠাকুরপুকুর থানা পুলিশের তদন্তে ।
জানা যায়,হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে গত ৬ জুন গভীর রাতে । খুন হয়ে যাওয়ার ভয়ে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি প্রথম দিকে গোপন করে যান বাদল স্যানাল । পরের দিন সকালে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাভাবিক মৃত্যুর শংসাপত্র করে নিয়ে স্ত্রী চায়না স্যান্যালের অন্তেষ্টিক্রিয়াও করে দিয়ে আসেন তিনি৷ কিন্তু স্ত্রীর এই মর্মান্তিক পরিনতি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না প্রৌঢ় বাদলবাবু । অবশেষে গত রবিবার তিনি তার প্রতিবেশীদের কাছে ঘটনার কথা খুলে বলেন । তার কাছে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা শোনার পর প্রতিবেশীরা ঠাকুরপুকুরে আসতে বলে বাদল স্যানালের মেয়ের প্রেমিককে । তার আগেই তারা স্থানীয় থানায় চায়না স্যান্যালের হত্যাকাণ্ডের কথা শুনিয়ে রাখে ৷ ঘাতক কিশোরীর প্রেমিক ঠাকুরপুকুরে আসতেই নাবালক প্রেমিক যুগলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা । প্রথমে তারা খুনের কথা অস্বীকার করলেও পুলিশের ম্যারাথন জেরায় নিজেদের অপরাধের কথা কবুল করে এবং পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে ।
জানা গেছে,বছর দেড়েক আগে মধ্যমগ্রামের ওই কিশোরের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়েছিল বাদল স্যানালের কিশোরী মেয়ের । প্রেমের পথের কাঁটা চায়না স্যান্যালকে চিরতরে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে কিশোরী । নিজের মাকে হত্যার আগেই প্রেমিককে মধ্যমগ্রাম থেকে সে আসতে বলেছিল । গভীর রাত হতেই দু’জন মিলে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায় । কিশোর-কিশোরীর এই নৃশংসতা দেখে স্তম্ভিত এলাকার বাসিন্দারা ।।