এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ জুলাই : বজ্রপাতে ভস্মীভূত হয়ে গেছে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজ । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন । পাশাপাশি তিনি এই ঘটনাকে রাজনীতির জন্য ধর্ম নিয়ে ছেলেখেলার ফল বলে মনে করছেন । বজ্রপাতের আগে ও পরে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’লক্ষণ ভালো নয়…দীঘার জগন্নাথ কালচারাল সেন্টার এ ভাস্কর্যের উপরে লাগানো ধ্বজ বজ্রপাতে পুড়ে গেলো। মহাপ্রভু শ্রীশ্রী জগন্নাথ জগতের নাথ, রাজনীতির জন্য ধর্ম নিয়ে ছেলেখেলা তিনিও ভালো ভাবে নেন নি। বিধর্মীদের যথেচ্ছ প্রবেশ, আমিষ খাবার খেয়ে শাস্ত্রবিধি না মেনে পুজো অর্চনা, রথের রশি জুতো দিয়ে মাড়ানো এমন সব ভুরি ভুরি অনাচার। কোনো একজনের অহং বোধ কে তুষ্ট করতেই মহাপ্রভুকে ‘ব্যবহার’ করা হচ্ছে, কিন্তু কথায় আছে ‘চখা আঁখি সবু দেখুচি’……….।’
প্রসঙ্গত,পুরী ধামের জগন্নাথ মন্দিরের নীলচক্রের উপরে উড়তে থাকা ‘পতিতপবন বানা’ ধ্বজ সম্পর্কে বহু অলৌকিক কাহিনী শোনা যায়। ওই ধ্বজা, বাতাসের উল্টো দিকে ওড়ে । ধ্বজ খুলে যাওয়াকে অনাগত বিপদের সঙ্কেত বলে মনে করা হয় । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দু’বার সেই ধ্বজ খুলে যায় । একবার ঘূর্নিঝড় আমফানের আগে ‘পতিতপবন বানা’ উড়ে যায় । আর দ্বিতীয়বার ধ্বজ খুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটে গত এপ্রিল মাসে । সেই সময় একটি ঈগল ধ্বজ খুলে নিয়ে যায় । এই ঘটনাকে অনেকে শ্রীবিষ্ণুর আবির্ভাবের ইঙ্গিত হিসাবে মনে করেছিলেন । তবে ৪৫ তলা উচ্চতা বিশিষ্ট পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে কখনো বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেনি ।
দিঘার জগন্নাথ কালচারাল সেন্টারটি পুরীর জগন্নাথ ধামের অনুকরণে নির্মিত । একবার সমুদ্র সৈকতে জগন্নাথ দেবের একটি মুর্তি পাওয়ার পর অলৌকিক তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা করেছিল রাজ্যের শাসকদল । সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেসের “বাংলার গর্ব মমতা” নামে একটা ফেসবুক পেজে পুরীর মন্দিরের ধ্বজ ঈগলে খুলে নিয়ে যাওয়া ও দিঘা সৈকতে পাওয়া জগন্নাথ মুর্তির ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছিল, ‘গত কয়েক দিনে দুটি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে—১২ই এপ্রিল – ৯০০ বছরে প্রথমবার, পুরী জগন্নাথ মন্দির থেকে একটি ঈগল ধ্বজা নিয়ে উড়ে যায়।২০শে এপ্রিল – মন্দির উদ্বোধনের আগেই দিঘায় আবির্ভাব জগন্নাথদেবের! দিঘার সমুদ্রে হঠাৎ ভেসে এল জগন্নাথদেবের কাঠের মূর্তি! সমুদ্র পথেই স্বয়ং এলেন প্রভু!—এই ঘটনাকে অনেকেই ঈশ্বরের ইচ্ছা বলে মনে করছেন।’ কিন্তু তৃণমূলের এই মনগড়া অলৌকিক তত্ত্বকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি রাজ্যের হিন্দুরা ।।

