এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান,২৯ ডিসেম্বর ঃ মঙ্গলবার বঙ্গধ্বনি যাত্রা শেষে সভা চলাকালীন চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হল বর্ধমান শহরে । মঞ্চের সামনে থেকে কর্মী সমর্থকদের একাংশ আওয়াজ তোলে বিজেপির দালাল খোকন দাস দূর হটো । এনিয়ে ব্যাপক হইহট্টগোলের সৃষ্টি হলে তাড়াতাড়ি মঞ্চ থেকে নেমে পালিয়ে যান রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বপন দেবনাথ । বিক্ষোভের জেরে সভা ছেড়ে চলে যান বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোকন দাস।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে বর্ধমান শহরের উল্লাস থেকে কার্জনগেট পর্যন্ত তৃণমূলের বঙ্গধ্বনি যাত্রা বের হয় । মিছিলের শেষে কার্জনগেটে এসে একটি সভার আয়োজন করা হয় । প্রথমে সংক্ষিপ্ত
বক্তব্য রাখেন স্বপন দেবনাথ । তারপর একে একে বক্তব্য রাখেন রাজ্য মুখপত্র দেবু টুডু ও জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার । এদিকে রাসবিহারীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পরেই প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিম স্লোগান দিতে শুরু করেন- ‘আমরা
দিদির অনুগামী। কেউ দাদার অনুগামী নয়।’ এরপরেই মঞ্চের নীচে থাকা তরুন তৃণমূক কর্মী সমর্থকরা খোকন দাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন – ‘খোকন দাস দূর হাটো, বিজেপির দালাল খোকন দূর হাটো, খোকন দাসকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়া হোক স্লোগান ওঠে।’ তার সঙ্গে চলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ । এমনকি কেউ কেউ পতাকার লাঠি উঁচিয়ে হুঁশিয়ারিও দেয় ।
দেখুন ভিডিও :
জানা গেছে,তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ । এরপরেই তাড়াতাড়ি মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায় স্বপনবাবুকে । যাকে ঘিরে শ্লোগান সেই খোকন দাসও অবস্থা বেগতিক বুঝে পালিয়ে যান । এরপরেই উজ্জ্বল প্রামাণিক মাইক ঘোষণা শুরু করেন- সভা শেষ, সকলে ফিরে যান। জেলা যুব সভাপতিও মাইকে একই কথা ঘোষণা শুরু করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও হৈহট্টগোল চলতে থাকে । কার্জন গেটের সামনে বিসি রোড আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা । বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল । ওই অবস্থায় কয়েকজন দলীয় কর্মী তখন প্রচারের টোটোতে থাকা মাইক নিয়ে খোকন বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন । এরপর দলীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে প্রায় আধ ঘন্টা খানেক পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে ।
যদিও খোকন দাসের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার । তাঁর কথায়, দলীয় কর্মী সমর্থকরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধ্বনি দিচ্ছিলেন। তাই ওই রকম কোনও স্লোগান তাঁর কানে যায়নি ।
তবে বর্ধমান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিম কারোর নাম না করে বলেন, ‘গোপনে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক করবে । এদিকে আবার দলের অনুষ্ঠান মঞ্চে বসে থাকবে তা তো মেনে নেবে না কর্মীরা । এদিন সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’ তবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বপন দেবনাথ ।
অন্যদিকে খোকন দাসের অভিযোগ, ‘এসব রাসবিহারী হালদার করিয়েছে। আমিও পারি পঞ্চাশটা ছেলে নিয়ে গিয়ে স্বপন দেবনাথের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়াতে । কিন্তু আমি এসব করতে চাই না ।’।