জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতা,২৪ জানুয়ারী :যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সেটা প্রথাগত বিদ্যালয় বা সঙ্গীত অথবা নৃত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে পারে, শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে আনন্দের আকর্ষণ হলো বার্ষিক অনুষ্ঠান। ভিন্ন ভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক মিলনে এই অনুষ্ঠান কার্যত পরিণত হয় মিলন অনুষ্ঠানে। একইসঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাই মিলে একঘেয়েমিকতার মধ্যে একটু আনন্দ উপভোগ করাও হয়। কলকাতার বেহালার ‘পঞ্চম মিউজিক অ্যাকাডেমি’র পঞ্চমতম বার্ষিক অনুষ্ঠানেও তার ব্যতিক্রম দেখা গেলনা । শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতিতে গত ২১শে জানুয়ারি বেহালা ব্লাইন্ড স্কুলে সংস্থাটির বার্ষিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই উপলক্ষ্যে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অ্যাকাডেমীর শিক্ষার্থীরাই অংশগ্রহণ করে।
‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ -র মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। একক নৃত্যে অদ্রিজা (সারা) উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। এছাড়া অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স ছিল মুগ্ধকর। অ্যাকাডেমীর শিক্ষিকা অন্তরা মুখার্জ্জী পরিবেশন করেন আধুনিক গান ও লোকগীতি। সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা পাঠ ইত্যাদিতে ভরপুর প্রায় তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি ছিল যথেষ্ট আকর্ষণীয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন অ্যাকাডেমির কর্নধার অন্তরা মুখার্জী।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে অ্যাকাডেমীর শিক্ষার্থী উপাসনা, সায়নি, শতরূপা, কীর্তিকা, অহনা, অনুরাগ, মধুমিতা, শ্বেতাংশী, আয়ুষ্মান, শ্রেয়া, অঙ্কিত, মানসী, কৃষ্ণা, কাকলি, শুভ্রাংশু, সুমিতা, সোনাক্ষী, অদ্রিজা ও অ্যাকাডেমীর শিক্ষিকা অন্তরা মুখার্জ্জী সহ অন্যান্যরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য তবলা ও হান্ডসনিকে সঞ্জয় , কীবোর্ডে অরূপ, গিটারে রতন এবং প্যাডে বাবাই প্রমুখ সহযোগিতা করেন। এছাড়াও আরও কয়েকজন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ চন্দ্রচূড় গোস্বামী এবং লোকসঙ্গীত শিল্পী অভিজিৎ দাস। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে বরণ করা হয়।
প্রসঙ্গত,বছর আটেক আগে বেতার ও দূরদর্শনের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী অন্তরা মুখার্জ্জী নিজের বাড়িতেই এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। নিজ গুণে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয়। বিভিন্ন উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে তিনি সঙ্গীত বোদ্ধাদের কাছে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছেন।
চন্দ্রচূড়বাবু,বলেন,’ডিজের অত্যাচারে আমাদের বাংলার সুস্থ সংস্কৃতি ধীরে ধীরে নষ্ট হতে বসেছে। আশা করা যায় এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাত ধরে বাংলা আবার তার হারানো সংস্কৃতির কিছুটা অন্তত ফিরে পাবে। আমি এদের পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ।’অন্তরাদেবী বললেন,’আমার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমি প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকি। তাছাড়া তাদের অভিভাবকরাও নিজ নিজ সন্তান কতটা গড়ে উঠেছে সেটা দেখার একটা সুযোগ পান।’ তিনি আরও বলেন,’আমার আশা এই অনুষ্ঠানটি আগামী প্রজন্মকে প্রথিতযশা শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবে।’।