এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ ফেব্রুয়ারী : মাত্র ৯ দিনের ব্যাবধানের ভারতের সঙ্গীত জগতের দুই মহীরুহের পতন হয়ে গেল । গত ৬ ফেব্রুয়ারী মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সুরসাম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেসকরের ৷ এদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পৃথিবীকে চিরবিদায় জানালেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর । মহান এই শিল্পির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলার সঙ্গীতপ্রেমী মানুষ ৷
নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ও হেমপ্রভা দেবীর সন্তান ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় । বংশানুক্রমিকভাবে পরিবারে গান বাজনার চর্চা ছিল । সেই সুত্রেই শৈশব থেকেই সঙ্গীতের জগতে হাতেখড়ি । যামিনী গঙ্গোপাধ্যায় (Yamini Ganguly) তাঁর প্রথম শিক্ষাগুরু । এছাড়া পরবর্তীকালে গুলাম আলি খানের কাছেও তিনি তালিম নিয়েছিলেন ।
কিশোর বয়সেই প্রথম রেকর্ড বের হয় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের । এইচএমভি থেকে রেকর্ড করা ওই গান ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় বাংলায় । তারপর সঙ্গীত পরিচালক রবীন চট্টোপাধ্যায়ের সুর দেওয়া সমাপিকা ছবির মধ্য দিয়ে চলচিত্র জগতে প্রবেশ । উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন অভিনীত ছবিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গানগুলি ব্যাপকভ্যাবে জনপ্রিয় হয়ে হয়ে উঠেছিল সেই সময়ে । রয়েছে একাধিক সুপার ডুপার হিট গান । সেই সমস্ত কালজয়ী গান যা আজও সমান জনপ্রিয় । এছাড়া রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, লোকগান, খেয়াল, ঠুংরি প্রভৃতি ক্লাসিক্যাল ঘেঁষা গানেও সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় । একটা সময়ে লতা মঙ্গেসকরের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে । কিন্তু তিনি বাংলার গন্ডি ছাড়িয়ে কখনও মুম্বাইয়ে পাড়ি দেননি ।
বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এই প্রবাদ প্রতিম শিল্পি । গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকেই তাঁর শারিরীক অবস্থা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায় । পরের দিন তাঁকে গ্রিন করিডোর করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল শিল্পির । এদিন সকাল থেকেই তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে । সন্ধ্যায় হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানিয়ে দেওয়া হয় অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের । তাঁকে আইসিইউতে ভেসোপ্রেসার সাপোর্টেও রাখা হয়েছিল । কিন্তু আর চিকিৎসায় সাড়া দিলেন না প্রখ্যাত এই শিল্পি । সন্ধ্যার অব্যবহিত পরেই চির ঘুমের দেশে চলে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ।।