এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২০ মার্চ : অস্ত্রপচার করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল প্রসুতির । মহিলাকে বাঁচাতে নুন্যতম তিন বোতল রক্ত দিতে হবে বলে জানিয়েছিলে চিকিৎসক । কিন্তু হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে মাত্র দু’বোতল রক্ত পড়ে ছিল । এই অবস্থায় যখন রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে অতান্তরে পড়েছিলেন প্রসুতির পরিবারের লোকজন ঠিক সেই সময় রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন খোদ চিকিৎসক । ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের । হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের দেওয়া রক্তে প্রাণ ফিরে পেলেন মুর্শিদাবাদ জেলার সালার থানার পুরানোগ্রামের বাসিন্দা মধূমিতা হাজরা(২৯) নামে ওই প্রসুতি । এরকম সঙ্কটজনক অবস্থায় নিজে রক্ত দিয়ে রোগীর প্রাণ বাঁচানোয় ডাঃ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেছেন এলাকার বাসিন্দারা । চিকিৎসককে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রসুতির পরিবারের লোকজন।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকেই প্রসববেদনা হচ্ছিল মধূমিতা হক নামে ওই প্রসুতির । তারপর যন্ত্রণা বাড়তে থাকলে গভীর রাতেই সালার থেকে আ্যম্বুলেন্সে করে তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । তখন হাসপাতালে ডিউটি করছিলেন ডাঃ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় । ওই বধূর আগেও অস্ত্রোপচার করে একটি সন্তান হয় । হাসপাতালে আনার কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রসুতির অপারেশন করা হয় । তিনি একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ।
সুদীপ্তবাবুর বলেন,’ওই পেশেন্টের অবস্থা খুব খারাপ ছিল । তাই বাধ্য হয়ে সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন করতে হয় । অপারেশনের পর রোগীর জরায়ু ঠিকমতো সঙ্কোচন না হওয়ার কারনে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয় । অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে রোগীর কিডনি কাজ করা বন্ধ হয়ে যায় । জরায়ু কেটে বাদ দিতে হয় । এই অবস্থায় ন্যুনতম তিন ইউনিট রক্ত প্রয়োজন ।’
জানা গেছে,ওই বধুর রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ । কিন্তু সেই সময় কাটোয়া হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে ওই গ্রুপের রক্ত মাত্র দু’ইউনিট মজুত ছিল ৷ ওই রক্ত প্রসুতির শরীরে দেওয়া হয় । কিন্তু বাকি এক ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে তখন কার্যত দিশেহারা অবস্থা প্রসুতির পরিবারের লোকজনের । ঠিক সেই সময় ডাঃ সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় নিজে রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন । তাঁর দেওয়া রক্তেই প্রান বাঁচে ওই বধুর । বর্তমানে ওই বধু ও নবজাতকের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা ।
প্রসুতির আত্মীয় আপেল হাজরা বলেন,” ওই ডাক্তারবাবুকে কৃতজ্ঞতা জানানোর কোনও ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না । ওনার এই উপকার আমরা চিরদিন মনে রাখবো ।’।