এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,০৪ সেপ্টেম্বর : বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুর মাঠের একটি বাড়ি থেকে মা ও মেয়ের পচাগলা দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে । বুধবার রাতে বর্ধমানের সদর থানার পুলিশ বাড়ির গেটসহ পরপর তিনটি তালা ভেঙে ঘরে ঢুকলে খাটের উপর চাদর জড়ানো অবস্থায় মা ও মেয়ের দেহ পড়ে থাকতে দেখে । সেই সময় ঘরের এসি চালানো ছিল । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন শিখা ভট্টাচার্য (৫৬) ও তাঁর মেয়ে তৃষা ভট্টাচার্য (৩০)। আজ বৃহস্পতিবার মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে । প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান যে মা ও মেয়ে বিষপান করে আত্মঘাতী হয়েছেন ।
জানা গেছে,মৃত শিখা ভট্টাচার্যর স্বামী স্বপন ভট্টাচার্য আরামবাগের একটি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। তবে তিনি বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুর মাঠে বাড়ি নির্মান করে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকতেন৷ বছর খানেক আগে রোগে মারা যান স্বপনবাবু । বছর দেড়েক আগে স্বপনবাবুর মেয়ে তৃষা ভট্টাচার্যর বিয়ে হয় । কিন্তু বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় ৷ তারপর থেকেই তিনি বাপের বাড়িতে থাকছিলেন ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে একজন প্রতিবেশী মহিলা তাদের বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য শিখাদেবীদের নিমন্ত্রণ করতে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু তিনি দেখেন বাড়ির গেটের তালা ঝোলানো । তিনি বাড়ির পিছনে জানালার কাছে যান ৷ তখন তিনি প্রবল দুর্গন্ধ পান৷ এরপর তিনি প্রতিবেশীদের ফোন করে বিষয়টি জানালে সকলে স্বপনবাবুদের বাড়ির সামনে এসে জড়ো হয় ৷ খবর পেয়ে বর্ধমান সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে৷ এরপর পুলিশ বাড়ির পরপর তিনটে তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে৷ তখন ঘরের মধ্যে মা ও মেয়েকে চাদর জড়ানো অবস্থায় খাটের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে ৷ সেই সময় বাড়ির এয়ার কুলার চালু ছিল বলে জানা গেছে ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ৫-৭ দিন ধরে শিখা ভট্টাচার্য ও তার মেয়ে তৃষা ভট্টাচার্যকে দেখা যাচ্ছিল না ৷ তারা মনে করেছিলেন যে মা ও মেয়ে কোথাও বেড়াতে গেছেন । তবে তারা এটাও জানান কিছুদিন আগেও তাঁরা ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তাদের অনুমান, হতাশায় বিষ পান করে আত্মঘাতী হয়েছেন তারা । পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে ৷।