এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৪ডিসেম্বর : তিন বছরের ছেলের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়েছে । ঠিকমত চিকিৎসা করালে শিশুটি হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতে পারে । কিন্তু অর্থাভাবের কারনে চিকিৎসা করতে অক্ষম পেশায় দিনমজুর বাবা । সাহায্যের প্রত্যাশায় স্থানীয় বিধায়ক ও পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বারবার ছুটে গেছেন । কিন্তু লোক দেখানো সহানুভুতি মিললেও কোনও আর্থিক সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ । তাই রোগ যন্ত্রনায় কাতর শিশুকে দেখে চোখের জল ফেলা আর ইশ্বরের কাছে ছেলের রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া বিকল্প কোনও রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন না মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চলের পিপলা গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণু দাস ও তাঁর পরিবারের লোকজন ।
জানা গেছে,পিপলা গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণু দাসের বাড়িতে আছেন স্ত্রী,এক ছেলে,এক মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মা । হতদরিদ্র পরিবার । করগেটের ছাউনি করগেট দিয়ে ঘেরা ২-৩ টি ঘুপচি ঘরে তাঁদের বসবাস । বিষ্ণু ভিন রাজ্যে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন । লক ডাউনের আগে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন । তারপর থেকে তিনি বাড়িতেই রয়েছেন । মুলত বিষ্ণুর রোজগারেই ছ’জনের দু’বেলার অন্ন সংস্থান হয় । কিন্তু কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাঁদের কার্যত অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে । এদিকে বিষ্ণুবাবুর ছেলে শুভ দাস গুরুতর অসুস্থ । তার ডান কানে ঘা থেকে ক্যান্সার হয়ে গেছে । ফলে তিনি ছেলের চিকিৎসার জন্য কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না ।
দেখুন ভিডিও :
বিষ্ণু দাস বলেন, ‘ছেলেকে মালদা, হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, কাটিয়ার ও রায়গঞ্জে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি । চিকিৎসকরা দ্রুত অপারেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন । অপারেশন করতে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে । এছাড়া অন্যান্য খরচও রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা লাগবে বলে অনুমান । ইতিমধ্যে যা কিছু সঞ্চয় ছিল ছেলের চিকিৎসায় সব খরচ হয়ে গেছে । এখন এতো টাকা কোথায় পাবো ? আত্মীয়স্বজনদের পক্ষে সাহায্য করা সম্ভব নয় । কারন তাঁদের কারোর আর্থিক অবস্থা ভালো নয় । বর্তমানে হাসপাতালে বিনামুল্যে চিকিৎসা চললেও ওষুধের খরচ জোটাতে পারছি না ।’
শুভর দাদু সঞ্চয় দাস বলেন, ‘সাহায্যের জন্য স্থানীয় বিধায়ক ও হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গিয়েছিলাম । কিন্তু ওনারা মেকি সহানুভুতি দেখালেও কাজের কাজ কিছু করছেন না । এমনকি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে দেওয়ার জন্যও বলেছিলাম৷। কিন্তু কেউ কোনও গুরুত্ব দিচ্ছেন না ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র অর্থাভাবে নাতিটার ঠিকমত চিকিৎসা হল না । এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে । এখন স্থানীয় মানুষ যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে হয়তো শিশুটা প্রাণে বেঁচে যেত ।’।