প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৩ নভেম্বর : নির্মান কাজ শেষ হতে না হতেই ভেঙে গেল কালভার্ট। তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের শুকপুর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে । ওয়ার্ক অর্ডার না মেনে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে কালভার্ট তৈরি হচ্ছিল বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। ঘটনার কথা জেনেই নড়ে চড়ে বসেছে ব্লক প্রশাসন । শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত ।
প্রাশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালভার্টটি তৈরি হচ্ছিল জামালপুরের চকদীঘি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দক্ষিণসুরার তেলে মাঠপাড়ায়। দক্ষিণসুরা থেকে স্থানীয় কালনা এলাকার সঙ্গে সংযোগের প্রধান রাস্তার উপরে থাকা পুরানো কালভার্টটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে ছিল। বহুবার অভিযোগ জানানোর পর অবশেষে কয়েকদিন আগে নতুন কালভার্ট নির্মানের কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুরু থেকেই অতীব নিম্ন মানের কাজ হতে থাকায় এলাকার মানুষজন প্রতিবাদ করতে শুরু করেন ।কিন্তু ঠিকাদারি সংস্থার লোকজন সেই প্রতিবাদকে পাত্তাই দেয়নি নবলে অভিযোগ এলাকাবাসীর ।
এলাকার বাসিন্দা দুলালী মুর্মু ও লখিন্দর বাস্কেরা বলেন,’একেবারে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কালভার্ট নির্মাণের কাজ হচ্ছিল। সরু রড, কমা পাথর, কমা সিমেন্ট,এইসব কিছু কালভার্ট নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল।ওয়ার্ক অর্ডার দেখতে চাওয়া হলে ঠিকাদার তা দেখাতে চায়নি।শনিবার ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর রবিবার সকালেই কালভার্টের একাংশ ধসে পড়ে ।’
এমন কাজ নিয়ে জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’সব কাট মানির খেলা। ঠিকাদারদের মাধ্যমে নেতাদের পকেট ভর্তি হচ্ছে, তাই কাজের মানও খারাপ হচ্ছে।এটাই তৃণমূলের উন্নয়ন ।’ চকদীঘি পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা গৌর সুন্দর মণ্ডল এদিন ঘটনাস্থলে পৌছে কালভার্ট নির্মানের কাজ দেখে স্বীকার করেন,নিম্নমানের সামগ্রী দিয়েই কালভার্ট নির্মানের কাজ হচ্ছে তাঁর কথায়,’এই কারণেই ঢালাইয়ের কাজ শেষ হতে না হতেই কালভার্টের একাংশ ধসে পড়েছে।’ ঘটনার তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তুলেছেন শুকপুর গ্রামের বাসিন্দারা ।
এ নিয়ে বিডিও (জামালপুর) পার্থসারথী দে বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত হবে । কাজে অনিয়ম ও গাফিলতি থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ একই ভাবে ঘটনার কথা জেনে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ভূতনাথ মালিক । তিনি বলেন,’কালভার্ট নির্মান কাজ যথাযথ ভাবে হয়েছে কিনা তার তদন্ত হবে। কাজে গলদ থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ঠিকাদারকে ব্ল্যাক লিস্টেড করা হবে।’।

