প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১১ ফেব্রুয়ারি : পরপর দু’বার সিপিএমের প্রার্থী হয়ে পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে কাউন্সিলর হয়েছিলেন । এবারও সিপিএম দল পূর্ব বর্ধমানের কালনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করেছিল মণিপ্রভা ভাদুড়িকে।কিন্তু কালনা পৌরভার অস্থায়ী কর্মী হয়ে তাঁর ভোটে লড়াটা মেনে নেননি প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী । পৌরসভার তৃণমূল প্রার্থী সুনীল চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে কালনার মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জানান । সেই কারণে নির্বাচন রাজ্য নির্বাচন কমিশন বৃহষ্পতিবার স্ক্রুটিনীর দিনে সিপিএম প্রার্থী মণিপ্রভাদেবীর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় । পৌরসভার একই কাজে যুক্ত থেকে ইতিপূর্বে দু’বার ভোট লড়ে কাউন্সিলার হওয়া মণিপ্রভাদেবীর মনোনয়ন এবার কমিশন বাতিল করায় বেজায় চটেছে সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁরা বিয়টি নিয়ে আদালের দ্বারস্থ হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
সিপিএমের হয়ে মণিপ্রভা ভাদুড়ী মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর তার প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী সুনীল চৌধুরী কালনা মহকুমা শাসকের দফতরে অভিযোগ জানান । তার অভিযোগ,’মণিপ্রভা ভাদুড়ী কালনা পৌরসভার বেতনভুক স্বাস্থ্যকর্মী । অভিযোগের পরিপেক্ষিতে বৃহস্পতিবার স্কুটিনীর দিনে সিপিএম প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়।পৌরসভা থেকে তিনি বেতন পান । সেই তথ্য মহকুমা শাসকের দফতরে তিনি দাখিল করে মণিপ্রভাদেবীর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিকে তিনি চ্যালেঞ্জ করেন । তার পরিপ্রেক্ষিতে পৌর নির্বাচন বিধি মেনে কমিশন যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়েছে ।’
যদিও তৃণমূল প্রার্থীর আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিএম প্রার্থী মণিপ্রভা ভাদুড়ি বলেন,’আসলে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চান । তাই তিনি এমন অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে করেছেন । মণিপ্রভাদেবী দাবি করেন,তিনি পৌরসভার স্বাস্থ্য কর্মী নন। তাই পৌরসভা থেকে বেতন পান না ।তিনি একটি সংস্থার অধীনস্ত স্বাস্থ্যকর্মী।ওই সংস্থার হতে তিনি বেতন পান। মণিপ্রভাদেবী বলেন ,ভোটে লড়ে জিততে পারবেন না বলে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী মিথ্য অভিযোগ দায়ের করে । আর সেটাকেই মান্যতা দিয়ে তাঁর মনোনয়ন কমিশন বাতিল করে দিয়েছে ।
এই বিষয়ে সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন,’আমরা আইনের পথে যাবো । তার প্রস্তুতিও শুরু করে দেওয়া হয়েছে । কারণ একই কাজ করেও এর আগেও দু’বার মণিপ্রভা ভাদুড়ী কাউন্সিলর ছিলেন। তাহলে এখন হঠাৎ করে আইনের কি পরিবর্তন হল?’যদি পরিবর্তনও হয়েও থাকে তাহলে তা সর্বদলীয় বৈঠকে প্রশাসন জানালোনা কেন ? যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপত্র দেবু টুডু বলেন, ’আইন তো সবার জন্য সমান। সিপিএম প্রার্থীর জন্য তো আলাদা আইন হতে পারে না ।’
এদিকে মণিপ্রভাদেবীর মনোনয়ন বাতিল করা নিয়ে সিপিএমের নেতারা যখন স্বোচ্চার তখন পৌরভোট নিয়ে প্রশাসন কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা এদিন জানিয়ে দিল জেলা প্রশাসন।এদিন সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে জেলাশাসক প্রিয়ংকা সিংলা বলেন,’আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া, দাঁইহাট, মেমারি ও গুসকরা পৌরসভার নির্বাচন হবে।ভোটে এই ছ’টি পুরসভার প্রতিটি বুথে সিসি ক্যামেরা থাকবে। সিসি ক্যামেরা ছাড়াও প্রতিটি বুথে থাকবে দু’জন করে সশস্ত্র পুলিশ’।এছাড়াও প্রতিটি পৌরসভার জন্য একজন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। জেলার জন্যেও বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আরও জানানো হয় ছ’টি পৌরসভার ১১৯টি ওয়ার্ডে ৪ লক্ষ ৬২হাজার ৮৪৮ জন ভোটার রয়েছেন।২৪১টি চত্বরে ৫৭১টি বুথে ভোট নেওয়া হবে“’। সব ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেই বিষয়টি সুনিশ্চিৎ করার জন্য এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে জেলশাসক আবেদন রাখেন ।।