প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৬ আগষ্ট : নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে কুড়ি বছরের সশ্রম কারদণ্ডের নির্দেল দিলেন বিচারক । শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়র বিচারক সুধীর কুমার এই সাজা ঘোষণা করেন । সাজাপ্রাপ্তর নাম সুব্রত হালদার । তাঁরবাড়ি কালনা থানার সাতগাছি পঞ্চায়েতের সুভাষপল্লী গ্রামে। কারাদণ্ডের সাজার পাশাপাশি অভিযুক্তকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে । জরিমানা অনাদায়ে অভিযুক্তকে আরও ছয় মাস কারাগারে কাটাতে হবে বলে বিচারক তাঁর নির্দেশে উল্লেখ করেছেন ।
আদালতের সরকারী পক্ষের আইনজীবী
মলয় পাঁজা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যাবেলায়। ১০ বছর বয়সী নির্যাতিতা হল অভিযুক্ত সুব্রত হালদারের প্রতিবেশী। ঘটনার দিন ওই নাবালিকা মুদিখানা দোকানে গিয়েছিল। দোকান থেকে ফেরার পথে সুব্রত হালদারের সঙ্গে ওই নাবালিকার দেখা হয়। সুব্রত একটা মোবাইল দেখিয়ে নাবালিকাকে বলে চার্জ ফুরিয়ে গেছে, তুই এটা বাড়িতে দিয়ে আয়।
সুব্রতর কথা মতো নাবালিকা সরল বিশ্বাসে তার বাড়িতে মোবাইল পৌঁছে দিতে যায় । ওই সময়ে সুব্রতও চুপিসারে নাবালিকার পিছন পিছন তার বাড়িতে আসে। এরপর নিজের বাড়ির ভিতরে পেঁপে গাছ তলায় সুব্রত নাবালিকাকে ধর্ষণ করে। নাবালিকা বাড়িতে গিয়ে তাঁর মাকে সুব্রতর কুকীর্তির কথা জানায়।এর পরেই নাবালিকার পরিবার
কালনা থানায় সুব্রতর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে । দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিল সুব্রত হালদারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (এ -বি) এবং পস্কো আইনের ৪ উপধারায় মামলা রুজু করে তাকে গ্রেপ্তার করে ।
বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে মামলার তদন্তকারী অফিসার সোমনাথ নস্কর সহ ১৬ জনের আদালতে সাক্ষ্য দেন ।তারই মধ্যে সামাজিক লজ্জার হাত থেকে মুক্তি পাবার জন্য নির্যাতিতা নাবালিকা আত্মহত্যা করে বসে । আদালতে পেশ হওয়া সমস্ত তথ্য প্রমাণ ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার বৃহস্পতিবার সুব্রত হালদারকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এদিন বিচারক অভিযুক্ত যুবককে তাঁর অপরাধের জন্য কুড়ি বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানার সাজা শোনান ।
রায়দান কালে নির্যাতিতা ওই নাবালিকার মা এদিন কালনা আদালতে হাজির ছিলেন । সাজা শোনার পর তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন,’বিচারক অভিযুক্তকে কঠোর সাজা দিয়েছেন ঠিকই । তবে তাঁর মেয়ের আর এই সাজা শোনা হল না ।’।