দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৭ নভেম্বর : গুরুতর আহত হয়ে ছাদে ঝিমিয়ে বসেছিল একটি হনুমান । যন্ত্রণায় কাতর ক্ষুধার্ত ওই হনুমানের নির্বাক চোখের ভাষা বুঝতে পেরেছিলেন ওই বাড়ির গৃহবধু । তৎক্ষনাৎ স্বামীকে ঢেকে এনে হনুমানটিকে প্রথমে তাঁরা পেটপুরে খাবার খাওয়ান । প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাবস্থাও করেন । তারপর তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বুধবার আহত হনুমানটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় বনদপ্তরের কর্মীরা । কাটোয়া শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার হরগৌরি পাড়ার বাসিন্দা বিশ্বরূপ সাহা ও সঙ্গীতা সাহা নামে ওই দম্পতির মানবিকতার প্রশংসা করেছেন এলাকার বাসিন্দারা । বিশেষ করে সঙ্গীতাদেবীর পশুপ্রেমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্থানীয় মানুষ ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,কয়েকদিন ধরেই ওই হনুমানটিকে হরগৌরি পাড়ায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছিল । মঙ্গলবার কোনওভাবে হনুমানের শরীরে আঘাত লেগে দু’জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল । সেই ক্ষত দিয়ে লাগাতার রক্তক্ষরণের ফলে ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছিল হনুমানটি ৷
সঙ্গীতাদেবী বলেন, ‘ওইদিন সকালের দিকে ছাদে কাপড় শুকতে দিতে গিয়ে দেখি হনুমানটি জলের ট্যাঙ্কের পাশে বসে রয়েছে । দেখেই বুঝতে পারি হনুমানটি খুব ক্ষুধার্ত ও জখমের কারনে হাঁটাচলার ক্ষমতা নেই । আমার পায়ের শব্দে সে আমার দিকে ফিরে তাকায় । পালিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে আমার চোখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে । বুঝতে পারি হনুমানটি কিছু যেন বলতে চাইছে । তাই দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে আমার স্বামীকে ডেকে এনে বিষয়টি দেখাই । কিছু খাবার খেতে দিই ।’
জানা গেছে,মঙ্গলবার দিনরাত হনুমানটিকে বাড়িতে রেখে শুশ্রূষা করেন সঙ্গীতাদেবী । রাতেই বনদপ্তরে খবর দেন তাঁর স্বামী বিশ্বরূপবাবু । এদিন সকালে বনদপ্তরের লোকজন এসে আহত হনুমানটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় । কাটোয়া মহকুমা বনআধিকারিক সুকান্ত ওঝা জানিয়েছেন,চিকিৎসার জন্য হনুমানটিকে বর্ধমানে পাঠানো হয়েছে ।।