এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০১ সেপ্টেম্বর : বয়সে ৮ বছরের ছোট সম্পর্কীয় ভাসুরের ছেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন গৃহবধু । এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত । দুই পরিবারের তরফ থেকেই যুগলকে এই সম্পর্ক থেকে সরে আসার জন্য বোঝানো হত । শেষ পর্যন্ত সম্পর্ক পরিনতি পাবে না বুঝতে পেরে তাঁরা দু’জনে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বিষপান করেন । পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার কোজলসা গ্রামের বাসিন্দা
রিতা হাজরা(৩০) ও অর্নব হাজরা(২২) নামে ওই প্রেমী যুগলের পরিবারের লোকজন বিষপানের বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় । কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই গৃহবধুর । অর্নব বর্তমানে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ।
জানা গেছে,বছর পনেরো আগে কোজলসার বাসিন্দা বিকাশ হাজরার সঙ্গে বিয়ে হয় রিতাদেবীর । তাদের দুই সন্তান রয়েছে । পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস বিকাশবাবুর খুরতুতো দাদার ছেলে অর্ণবদের । অর্ণব হায়দ্রাবাদে রুটি কারখানায় কাজ করতেন । গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারনে অর্ণব বাড়ি ফিরে আসে । তারপর থেকে তিনি বাড়িতেই রয়েছেন ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, বয়সে ৮ বছরের ছোট অর্ণবের সঙ্গে বছর তিনেক ধরে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে রিতাদেবী । উভয় পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পারলে তাঁদের এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বোঝায় । কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি । ইতিমধ্যে তাঁরা কোথাও পালিয়েও গিয়েছিলেন । যদিও তখন পরিবারের লোকজন তাঁদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন । অর্ণব হায়দ্রাবাদে থাকাকালীন তাঁদের নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ ছিল । কিন্তু সে বাড়ি ফিরে আসার পরেই দু’জনের মধ্যে ফের ঘনিষ্ঠতা শুরু হয় । ফলে দুই পরিবারের মধ্যে এনিয়ে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত ।
রিতাদেবীর স্বামী বিকাশ হাজরা ও অর্ণবের কাকা মঙ্গল হাজরারা বলেন, ‘আমরা দুজনকেই এই সম্পর্ক থেকে সরে আসার জন্য অনেক বোঝাতাম । কিন্তু আমাদের কথায় কোনও কাজ হয়নি । অর্ণব হায়দ্রাবাদে থাকাকালীন দু’জনের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ ছিল । কিন্তু আমরা তা জানতেও পারিনি ।’
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,মঙ্গলবার বিকেলে রিতাদেবীর সঙ্গে দেখা করে অর্ণব । তারপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দুজনেই বিষপান করেন । জানতে পেরে পরিবারের লোকজন তাদের প্রথমে কেতুগ্রাম-১ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে । সেখান থেকে অর্নব হাজরকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । এদিকে রিতাদেবীর অবস্থার অবনতি হলে তরিঘরি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয় । বুধবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ।।