এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৯ জানুয়ারী : বংশগত সূত্রে মুসলিম হওয়ার কারনেই হোক বা মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের লোভ, জহরলাল নেহেরু থেকে শুরু করে তার বর্তমান প্রজন্ম রাহুল গান্ধী বা সোনিয়া গান্ধীর (অ্যান্টেনিয়া মাইনো) মধ্যে সুপ্ত হিন্দু বিদ্বেষী মানসিকতা আজ গোপন নেই । কংগ্রেস তার সুদীর্ঘ শাসনকালে এমন কিছু আইন পাশ করে গেছে যা ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য ভয়ঙ্কর রকমের ক্ষতিকারক । কংগ্রেস এমনই আরও একটি বিল পাশ করতে চেয়েছিল যাতে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ‘দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক’ করে দিত বলে নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দাবি করেছেন সনাতনী হিন্দু রাকেশ নামে জনৈক এক ব্যক্তি । তিনি জানান, আর সেই আইনটি হল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিষিদ্ধ আইন ২০১১ যেটিকে আমরা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিল নামে জানি ।
এই বিলের সমর্থনে দাঁড়িয়ে ছিল অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি), মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি), লালু যাদবের জনতা দল ইউনাইটেড(জেডিইউ), এমকে স্ট্যালিনের ডিএমকে এবং শারদ পাওয়ারের এনসিপি-এর মত দলগুলি । শুধুমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টির(বিজেপি) তীব্র বিরোধিতার কারণে বিলটি পাস করতে পারেনি কংগ্রেস ।
অভিযোগ ওঠে যে এই বিলের মাধ্যমে ভারতে বসবাসরত তথাকথিত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার নামে দেশীয় হিন্দুদের মনে নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরি করা এবং হিন্দুদের ভারতে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল কংগ্রেস । স্বর্গীয় বিজেপি নেতা অরুন জেটলি এটিকে ‘একটি বিপজ্জন খসড়া’ বলে অবিহিত করেছিলেন ।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিলটি সোনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আহমেদ প্যাটেল আরব দেশগুলির নির্দেশে ভারতকে ধীরে ধীরে একটি মুসলিম দেশে পরিণত করার জন্য তৈরি করেছিলেন বলে কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন । উল্লেখ্য, আহমেদ প্যাটেল একজন অত্যন্ত কট্টর সুন্নি মুসলিম যিনি প্রতি বকরিদে নিজের হাতে অনেক পশুকে কুরবানি দিতেন । তবে সংসদে বিল পেশের আগে,২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান আহমেদ প্যাটেল ৷
তিনি লিখেছেন, এখন যদি ভারতে বসবাসকারী সমস্ত অমুসলিম নাগরিক (হিন্দু, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি, খ্রিস্টান) এই বিলের বিরোধিতা না করত, তাহলে এই বিল পাশ হওয়ার পর খুব তাড়াতাড়ি দেশে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়ত এবং লক্ষ লক্ষ অমুসলিম মানুষ মারা যেত অথবা বিনা অপরাধে জেলে থাকত।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থেকে দেশকে বাঁচানোর নামে, এই বিলে শুধুমাত্র হিন্দুদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান ছিল, যা শুধুমাত্র তথাকথিত সংখ্যালঘুদের বাঁচাতে এবং তাদের মনোবল বাড়াতো । কিন্তু পৃথিবীর প্রতিটি দাঙ্গার ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে । কলকাতার ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস’-এর ইতিহাস দেখলে জানতে পারা যায় যে ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি হিন্দুরা করেনি । ভারত বা বিশ্বের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাগুলির ইতিহাসও একই কথা বলে যে দাঙ্গা সৃষ্টি প্রথমে অমুসলিমরা করেনি । বাংলাদেশশের সমস্ত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরুর পিছনে ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের হাত ।
মনে করা হচ্ছে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিষিদ্ধ আইন ২০১১ বিলের মাধ্যমে তথাকথিত সংখ্যালঘুরা তাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিলের ভয় দেখিয়ে এদেশে বসবাসরত হিন্দুদেরকে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্মান্তরিতকরণ বা জিহাদ বা লাভ জিহাদ যে কোনো উপায়ে হয়রানি করার অধিকার পেয়ে যেত বলে দাবি করেছেন তিনি ।
তাঁর কথায় এই বিলের উউদ্দেশ্য ছিল…
প্রথমত,আইনশৃঙ্খলা রাজ্য সরকারের বিষয়, কিন্তু এই বিল অনুসারে, কেন্দ্র যদি “মনে করে” তবে তারা রাজ্য সরকারের কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার তীব্রতার উপর নির্ভর করে রাজ্য সরকারকে তারা বরখাস্ত করবে কি না… । এর অর্থ হল, যদি ১০০-২০০ কংগ্রেসম্যান বা ১০০-৫০ জন জিহাদি কোনো রাজ্যে দাঙ্গা ছড়ায়, তাহলে রাজ্য সরকারকে সহজেই বরখাস্ত করা যেতে পারে ।
দ্বিতীয়ত,এই প্রস্তাবিত বিল অনুসারে, দাঙ্গা সর্বদা “সংখ্যাগরিষ্ঠ” দ্বারা সংঘটিত হয়, যখন “সংখ্যালঘু” সর্বদা সহিংসতার লক্ষ্যবস্তু হয়। এই বিলে হিন্দুদের ‘দাঙ্গাকারী’ শব্দ দিয়ে সম্বোধন করা হয়েছে।
তৃতীয়ত,দাঙ্গার সময় যদি কোনও “সংখ্যালঘু” মহিলা ধর্ষিত হয় তবে এই বিলে কঠোর বিধান ছিল যে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না । এই বিলে বলা হয়েছে যে দাঙ্গার সময় হিন্দু নারীদের ধর্ষণের জন্য মুসলমানদের দোষী করা হবে না ।
চতুর্থত,একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের (অর্থাৎ সংখ্যালঘুদের) বিরুদ্ধে একটি “ঘৃণাত্মক প্রচারণা” (ফেসবুক, টুইট এবং ব্লগ সহ) চালানোও ছিল একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ ।যখন সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগরিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে এবং বলতে স্বাধীন ছিল ।
পঞ্চমত, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের” একজন সদস্য এই আইনের অধীনে শাস্তি পেতে পারেন না যদি তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঙ্গার অপরাধে অভিযুক্ত হন, এমনকি যদি সে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের কোনও মা, বোন, পুত্রবধূর সম্মান অবমাননা করে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না । কারণ এই আইনে ধরে নেওয়া হয় যে শুধুমাত্র “সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়” সহিংস এবং আগ্রাসী, যখন সংখ্যালঘুরা শুধুমাত্র আত্মরক্ষা করে।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিষিদ্ধ আইন ২০১১ এর খসড়া কমিটির সদস্যরা হলেন– গোপাল সুব্রামানিয়াম, মাজা দারুবালা,নাজমি ওয়াজিরি,পি.আই.জোস,
প্রসাদ সিরিভেলা,তিস্তা সিতালওয়াড়া,উষা রামানাথন,বৃন্দা গ্রোভার,ফারাহ নকভি এবং হর্ষ মান্ডার ।
এই বিলের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন–
আবু সালেহ শরফ, আসগর আলী ইঞ্জিনিয়ার মো,
গগন শেঠি,এইচ এস ফুলকা,জন দয়াল,বিচারপতি হোসবেত সুরেশ,কামাল ফারুকী,মনজুর আলম,
মাওলানা নিয়াজ ফারুকী,রাম পুনিয়ানি,রূপরেখা ভার্মা,সমর সিং,সৌম্য উমা,শবনম হাশমি,মারি স্কারিয়া,সুখদো থোরাট,সৈয়দ শাহাবুদ্দিন, উমা চক্রবর্তী,উপেন্দ্র বক্স প্রমুখ ।।
★বিশেষ দ্রষ্টব্য : সনাতনী হিন্দু রাকেশের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত হিন্দি ভাষায় লেখা প্রতিবেদন থেকে সংগৃহীত ।