দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২১ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের কুলাই গ্রাম বৈষ্ণবদের অন্যতম পরিত্র তীর্থস্থানগুলির মধ্যে অন্যতম । কথিত আছে,১৫১০ সালে কুলাই গ্রামের পাশে অজয় নদের ঘাটকুড়ি ঘাটে একটি প্রাচীন বট গাছের তলায় শ্রীচৈতন্যদেব সন্ন্যাস গ্রহণের পরবর্তী সময়ে ২ দিন ২ রাত কাটিয়েছিলেন । সেই থেকেই ঘাটকুড়ি ঘাট মহাপ্রভুর বিশ্রামতলা হিসেবে খ্যাত। আর এই গ্রামেই ১৪৮২ সালে বাংলার কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে জন্মগ্রহণ করেন গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদের অন্যতম রচয়িতা বাসুদেব ঘোষ । প্রতিবছর এই সময়ে বাসুদেব ঘোষের জন্ম ভিটেতে তাঁর স্মরণে উৎসবের আয়োজন করা হয় । সোমবার থেকে শুরু হয়েছে এই উৎসব । বসেছে পালা কীর্ত্তন, কবিগান, হরিনাম সংকীর্তনের আসর । দূরদুরান্ত থেকে অগনিত শ্রদ্ধালু এসে জড়ো হয়েছে কুলাই গ্রামে ।
জানা যায়,মুর্শিদাবাদের রাসোরা গ্রামে পৈতৃক বাড়ি ছিল বাসুদেব ঘোষের । তাঁর বাবা গোপাল ঘোষ রাসোরা ছেড়ে পরিবার নিয়ে কুলাই গ্রামে চলে আসেন । এই গ্রামেই গৌরাঙ্গ বিষয়ক দু’শতের অধিক পদ রচনা করেন গৌর নাগরবাদের প্রবর্তক বাসুদেব ঘোষ । তিন ১৫০৯ সাল থেকে দীর্ঘ একবছর নবদ্বীপে এসে চৈতন্যদেবের সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন । পরে চৈতন্যদেব নীলাচলে চলে গেলে মেদিনীপুর জেলার তমলুকে এসে সাধন ভজন করে আমৃত্যু কাটিয়ে দেন বাসুদেব ঘোষ । ১৫৮২ সালের মদন ত্রয়োদশী তিথিতে সেখানেই তাঁর প্রয়ান হয় ।
কুলাই গ্রামের বাসুদেব ঘোষ স্মরণ উৎসব কমিটির কর্মকর্তা তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য তরুন মুখোপাধ্যায় কুলাই গ্রামসহ কেতুগ্রামের বৈষ্ণব তীর্থস্থানগুলি নিয়ে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন । পাশাপাশি তাঁর দাবি, বৈষ্ণব কবি বাসুদেব ঘোষের পুঁথিগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক ।।