এইদিন ওয়েবডেস্ক,টাঙ্গাইল,১৩ সেপ্টেম্বর : সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে একটি বোবাকালা মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল এক যুবক । নির্যাতিতার মা বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুড়ে বেড়ায় । শেষ পর্যন্ত এলাকার কয়েকজন মৌলবী অভিযুক্ত যুবককে ডেকে এনে দু’চার ঘা চর থাপ্পর মেরে বিবাদের নিষ্পত্তি করে দেয় । বাংলাদেশের টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় করটিয়া ইউনিয়নের ক্ষুদিরামপুর দক্ষিন পাড়ার ঘটনা । এদিকে মৌলবীদের এহেন বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কানাকানি হতেই শোড়গোল পড়ে গেছে এলাকায় ।
জানা গেছে,অভিযুক্ত মহম্মদ আলম মিঁয়া করটিয়া ইউনিয়নের ক্ষুদিরামপুর দক্ষিন পাড়ার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে । দিন কয়েক আগে সকালে বোবাকালা মেয়েকে ঘরে তালা দিয়ে মা বন্ধুচুলা প্রতিষ্ঠানে কাজে চলে যান । এদিকে তক্কে তক্কে ছিল মহম্মদ আলম মিঁয়া । মেয়েটির মা চলে যেতেই সে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে । ফের ওই সিঁধ দিয়েই সে পালিয়ে । পরে মা ফিরে এলে মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে ইশারায় সব কথা খুলে বলে । মেয়েটির মা ন্যায় বিচারের আশায় এলাকার মৌলবীদের কাছে ছুটে যান । কয়েকদিন মৌলবীরা তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি । কিন্তু মহিলা বারবার ছুটে যাওয়ায় গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফুটিকিয়া ক্ষুদিরামপুর জামে মসজিদে সালিসি সভা বসানো হয় । উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ব্যাংকার ও বর্তমানে মৌলবীর কাজ করা মহদ মোশারফ হোসেন ছাড়াও মোখলেছুর রহমান, মহম্মদ চান মিয়া, আ. রাজ্জাক প্রভৃতি আরও কয়েকজন মৌলবী ।
স্থানীয় বাসিন্দা অ. রহিম জানান, অসহায় বাক প্রতিবন্ধী মেয়েটির বাবা নেই। এলাকার মাতব্বরা যে মীমাংসা করলো এটি মেনে নেওয়ার মত নয় । এলাকার প্রভাশালী মহম্মদ মোশারফ হোসেন। তিনি বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য অভিযুক্তকে মসজিদে ডেকে এনে দু’চার ঘা চর থাপ্পর মেরে সমাধান করেছেন। এটি ঘৃনিত একটি কাজ করেছেন । মেয়েটির মা গরীব সে একটি প্রতিষ্ঠানে ছোট একটি কাজ করেন। প্রতিনিয়তই বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ঘরে তালা দিয়ে রেখে যায়। সেই সুযোগে ওই যুবক এই কাজ করেছে। ছেলেটি এর আগেও এই মেয়েকে বিরক্ত করত বলে জানতে পেরেছি আমরা ।
স্থানীয় মৌলবী অ. রাজ্জাকের কথায়, বিয়ষটি টাঙ্গাইলের এসপি ওসিসহ সবাই জানে। যার প্রেক্ষিতে বিচারে পুলিশ ছিলো। তিনি আরো বলেন বিষয়টি যে আলোচনা হয়েছে সেটি প্রকৃতপক্ষে হয়নি । আসলে ছেলেটি বখাটে হওয়াতে তাকে সন্দেহ করে ভুক্তভোগীর মা। যার কারনে তাকে চর থাপ্পর দিয়ে শাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয় এলাকার প্রভাবশালী মাতব্বর মহম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা কোন বিচার করি নাই। ছেলের দাদা আজিজুল ছোট ভাইকে চর থাপ্পর দিয়ে নিয়ে গেছে। পুলিশের বিষয় নিয়ে তিনি বলেন কে বা কারা পুলিশকে বলেছে সেটা আমি জানি না। তবে তিনি বলেন আমাদের এলাকায় টহল পুলিশ থাকে তারাই শালিসে উপস্থিত ছিল।
করটিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মানিক মিয়া বলেন, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই কাউকে না জানিয়ে ভুক্তভোগীকে মসজিদে ডেকে সমাধান করে দেওয়া হয়েছে । তবে এটি মোটেই ঠিক করেনি। গরীব লোক পাইয়া সম্ভবত টহল পুলিশকে সামনে রেখে ধামাচাপা দিয়েছে।
এই বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনর্চাজ তানভীর আহমেদ জানান, ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলেই আমরা আমলে নেবো। তবে যে যাই বলুক না কেন পুলিশের কথা অনেকেই বলে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। সেদিকে নজর না দিয়ে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলবো ভুক্তভোগীর মাকে। অভিযোগ পেলেই অভিযুক্তকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পারবো ।।