এইদিন ওয়েবডেস্ক,সুদান,২১ ডিসেম্বর : গত এপ্রিল মাস থেকে ইসলামি রাষ্ট্র সুদানে গৃহযুদ্ধ চলছে । আরব নিউজের খবর অনুযায়ী গৃহযুদ্ধ বর্তমানে ভয়ঙ্কর আকার ধারন করেছে । সুদানের একটি শক্তিশালী আধাসামরিক বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে ভীষণ সংঘর্ষ চলছে । এই সংঘাতের জেরে লাখ লাখ মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে পালাচ্ছে । যুদ্ধটি হচ্ছে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের(আরএসএফ) জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো পরিচালিত আধাসামরিক বাহিনী এবং জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহান পরিচালিত সুদানী সেনাবাহিনীর মধ্যে । খবর রয়েছে যে আরএসএফ রাজধানী খার্তুমের দক্ষিণ-পূর্বে ওয়াদি মেদানি দখল করেছে, যা সংঘর্ষকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গ্লোবাল ক্রিমিনাল জাস্টিসের জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত-অ্যাট-লার্জ বেথ ভ্যান শ্যাক সম্প্রতি সুদানে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ এবং অপব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন,’আজ পর্যন্ত, আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুসারে, কমপক্ষে ১০,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং ৬.৮ মিলিয়নেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কেউ কেউ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রয়েছেন এবং কেউ কেউ আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে । আমরা সকলেই হিমশীতল মিডিয়া রিপোর্ট দেখেছি যা প্রতিফলিত করে যে হাজার হাজার লোককে খার্তুম এবং এর আশেপাশে আটক স্থানগুলিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে আমরা জানি যে কয়েকজনকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং কিছুকে হত্যা করা হয়েছে ।’
তিনি আরও বলেন,’সুদানে ব্যাপক হারে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং যৌন দাসত্বের ঘটনা ঘটেছে । বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা প্রায়শই কোনো ধরনের চিকিৎসা পরিসেবা বা মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা পেতে অক্ষম হচ্ছে, ফলে তারা দীর্ঘস্থায়ী ট্রমা চলে যাচ্ছে । পূর্বের সুদান শাসনকালে যে দারফুরে গণহত্যা হয়েছিল, সেখানে আজ সহিংসতা চলছে ।’
তিনি বলেন,’আমরা আরএসএফ এবং সংযুক্ত আরব মিলিশিয়াদের বিশেষ করে মাসালিত মানুষ এবং অন্যান্য আফ্রিকান সম্প্রদায়ের সদস্যদের খুঁজে বের করার, পুরুষ এবং ছেলেদের শিকার করা, তাদের জীবনের জন্য মরিয়া হয়ে পালিয়ে যাওয়া লোকদের গুলি করে, মূল্যবান সবকিছু চুরি করা এবং বাকিদের পুড়িয়ে ফেলার অসংখ্য, বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন পড়েছি ।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র সুদানের ট্র্যাজেডি পর্যবেক্ষণ করছে ।
সুদানে পরবর্তীতে কী হতে পারে তা স্পষ্ট নয়। গাজা যুদ্ধ এবং লোহিত সাগরকে কেন্দ্র করে, সুদানকে কম মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে । ফলে সুদানের অভ্যন্তরে কি প্রকার সংঘর্ষ ঘটে চলেছে তা বিশ্বের কাছে আজ অজানা । কিন্তু এই দেশটি এই অঞ্চলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । কারন লোহিত সাগরের মতো অনেক কৌশলগত অঞ্চলের সীমানা থাকার সুবাদে সুদানে স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনা জরুরি । যদিও সুদানের যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষের জন্য খুব বেশি কিছু করা হবে বলে মনে হয় না। তবুও সুদানের সংঘাত, এই অঞ্চলের উপর এবং এর প্রভাবের উপর ফোকাস চালিয়ে যাওয়া আমেরিকার মত দেশগুলির কাছে খুবই জরুরি ।।