প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১০ডিসেম্বর : অর্থ নিয়ে বন্দুকের জাল লাইসেন্স তৈরি করে দেওয়া চক্রের এক কিংপিন সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করলো সিআইডি । ধৃতদের নাম সফিক মোল্লা, জুলফিকার শেখ, সাবির মণ্ডল, ইমানুল মণ্ডল, হাফিজুল শেখ ও বিমান মণ্ডল। ধৃতদের মধ্যে সফিকের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার হরিণডাঙায় । সেই জাল লাইসেন্স তৈরির কিংপিন বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। সিআইডি দল বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে । একই রাতে কলকাতার দক্ষিণদাড়ি, জগৎপুর, বন্ডেল গেট প্রভৃতি জায়গায় সিআইডি অফিসারা বাকিদের গ্রেফতার করে । তাঁদের মধ্যে জুলফিকারের বাড়ি জেলার নাদনঘাট থানার বোচপুরে।আর মন্তেশ্বর থানার কুলে গ্রামে সাবিরের,মেমারি থানার হরিণডাঙায় ইমানুলের,কেতুগ্রামের আমবোনায় হাফিজুলের বাড়ি। বিমানের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণার হাড়োয়ার গুবরিয়ায় । ধৃতদের কীর্তি জানার পর স্তম্ভিত মেমারির বাসিন্দারা ।
সিআইডির দাবি সফিকের কাছ থেকে পূর্ব বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগণার জেলা শাসকের জাল রাবার স্ট্যাম্প পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এবং চন্দননগর কমিশনারেটের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং মুর্শিদাবাদের জাল রাবার স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়েছে। এমনকি বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সরকারি আধিকারিকদের নকল স্ট্যাম্পও সফিকের কাছ থেকে মিলেছে বলে সিআইডির দাবি ।গোয়েন্দারা এও জেনেছেন , রাজ্য জুড়ে এই চক্রটি বন্দুকের জাল লাইসেন্স সরবরাহ করেছে ।তারা নিরাপত্তারক্ষীদের যে ৫ টি বন্দুক ও জাল লাইসেন্স দিয়েছে সেগুলিও সিআইডি বাজেয়াপ্ত করেছে ।
সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে সিআইডির তদন্তকারী অফিসার শুক্রবার ধৃতদের পেশ করেন বর্ধমান আদালতে । চক্রের বিষয়ে বিশদে জানতে এবং বন্দুকের জাল লাইসেন্স তৈরির আরও কারা কারা জড়িত বাকিদের হদিশ পেতে ধৃতদের ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান সিআইডি অফিসার । সিছেএম ৬ জনকেই ৮ দিন সিআইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন সিজেএম।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী জাল বন্দুকের লাইসেন্স ব্যবহার করে বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করছে বলে কিছুদিন আগে খবর আসার পর সিআইডি তদন্তে নামে ।তদন্তে নামার পর গোয়েন্দারা ৫ জনের জাল লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে পারেন । তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা গোয়েন্দারা নিশ্চিৎ হন বন্দুকের লাইসেন্স গুলি জাল । গোয়েন্দারা এও জানতে পারেন ,জাল রাবার স্ট্যাম্প ব্যবহার করে ও সরকারি উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সই নকল করে লাইসেন্স গুলি মোটার বিনিময়ে তাঁদের দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জাল বন্দুকের লাইসেন্স তৈরি চক্রের কিংপিন সফিকের নাম জানতে পারেন ।এরপরেই বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ চক্রের কিংপিনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে ।।