দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৯ নভেম্বর : অতিবৃষ্টিতে বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে অস্থায়ী আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল গ্রামের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটি । তবে তখন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল । বিকল্প কোনও ব্যাবস্থা না থাকায় সেই শর্তেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লকের সাহেবগঞ্জ-২ পঞ্চায়েতের ওড়গ্রামের বাসিন্দা পেশায় মাছ বিক্রেতা লক্ষণ ধীবর । তারপর থেকে স্ত্রী দুই ছেলে,দুই পুত্রবধু,দুই নাতনিকে নিয়ে তিনি সেখানে চরম কষ্টের মধ্যে বসবাস করছেন ৷ কিন্তু সম্প্রতি ঘর ছাড়ার জন্য পঞ্চায়েত থেকে তাঁকে নোটিশ ধরানো হয়েছে । ফলে কনকনে শিতের মধ্যে চরম বিপাকে পড়ে গেছে দরিদ্র অসহায় ওই পরিবারটি ।
জানা গেছে,ওড়গ্রামের পূর্ব বাউরি পাড়ায় মাটির বাড়ি ছিল লক্ষণ ধীবরের । ওই বাড়িটিই ছিল তাঁকে নিয়ে পরিবারের ৮ সদস্যের মাথা গোঁজার একমাত্র আশ্রয়স্থল । কিন্তু বিগত বর্ষায় অতিবৃষ্টির কারনে লক্ষণবাবুদের মাটির বাড়িটি ভেঙে পড়ে যায় । ফলে পরিবার নিয়ে তিনি অতান্তরে পড়ে যান । দ্বারস্থ হন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বিনয়কৃষ্ণ ঘোষের ।
লক্ষণ ধীবর বলেন, ‘প্রধান সাহেব পাড়ার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের একটি ঘর আমাদের থাকার জন্য সাময়িকভাবে ব্যাবস্থা করে দেন । তবে মাত্র দু’মাস সময় দেওয়া হয় । তার মধ্যে এক তো মাস কেটেই গেল । এখন এই ঠান্ডার মধ্যে আমরা কোথায় যাবো ?’ তাঁর অভিযোগ, ‘সরকারি আবাস যোজনার অনুদানের জন্য কতবার পঞ্চায়েতের কর্তাদের হাতেপায়ে ধরেছিলাম । তখন যদি অনুদান মঞ্জুর করা হত তাহলে আজ আমাদের এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হত না ।’
যদিও পঞ্চায়েত প্রধান বিনয়কৃষ্ণ ঘোষ জানান,আবাস যোজনার তালিকায় ওই ব্যক্তির নাম ছিল না । তবে সম্প্রতি ওনার আবেদনপত্র ব্লক প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে । জানা গেছে, লক্ষণ ধীবরের দুই ছেলে জনমজুরির কাজ করেন । বাবা ও ছেলেদের সামান্য উপার্জনে অতিকষ্টে তাঁদের সংসার চলে । অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবার হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁদের নাম এতদিন আবাস যোজনার তালিকায় উঠলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।।