এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ মার্চ : সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় ও প্রেম,তারপর সীমানা টপকে পালিয়ে এসে ভারতীয় যুবককে বিয়ে করে এদেশে স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়া – সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানি যুবতী ও ভারতীয় যুবকের এই প্রকার প্রেমবাহিনী প্রায়ই শোনা যায় । মাস কয়েক আগে এক পাকিস্তানি তরুনী সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকার প্রেমিকের কাছে পালিয়ে এসে তাকে বিয়ে করে ভারতে বসবাস শুরু করে দিয়েছে । ভারতীয়রা বিষয়টি নিছক প্রেমকাহিনী হিসাবে দেখলেও পাকিস্তানি তরুনীর সাথে ভারতীয় যুবকের প্রেম-বিবাহের ফলে দায়িত্ব বেড়ে গেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের । কারন বিয়ের পর পাকিস্তানি বধূকে দেখতে তার পরিবারের লোকজনে ভারতে আনাগোনা বেড়ে যাচ্ছে । আর সেই সূযোগে পাকিস্তানি কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের চর ও পাকিস্তানের সৃষ্ট সন্ত্রাসবাদীরা ঢুকে পড়ে ভারতে নাশকতার ছক কষছে । এই প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রুখতে কড়াকড়ি শুরু করে দিয়েছে ভারত সরকার । পাকিস্তানিদের ভিসা দেওয়ার উপর লাগাম টেনে ধরা হয়েছে । সেই সাথে পাকিস্তানি বধূদের সর্বক্ষণ থাকতে হচ্ছে গোয়েন্দারে কড়া নজরদারির মধ্যে । তাদের ভারতে অবাধ যাতায়াতের উপরে রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা । এমনকি ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের পড়তে হচ্ছে সমস্যার মুখে । এদিকে ভিসায় কড়াকড়ি শুরু হতেই কমেছে পাকিস্তানিদের আনাগোনা ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী,বর্তমানে শুধুমাত্র কলকাতাতেই রয়েছে বিভিন্ন বয়সের ৬০ জন পাকিস্তানি মহিলা । তাদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ঘর সংসার করছেন । ওই সমস্ত মহিলাদের পরিবারের লোকজন প্রায়ই কলকাতায় আসত । ছিল নিয়মিত যাতায়াত । কিন্তু ইসলামি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর নাশকতার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে পাকিস্তানিদের অবাধ যাতায়াতের উপর লাগাম টেনে ধরেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক । এখনো যে কয়জন ভারতে আসছেন, তারদের সর্বক্ষণ থাকতে হচ্ছে গোয়েন্দাদের র্যাডারে ।
আর ভারত সরকারের এই কড়াকড়ির কারনে একদিকে যেমন পাকিস্তানিদের আনাগোনা কমেছে । অন্যদিকে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভারতের নাশকতার ঘটনাও প্রায় এক প্রায় প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে । রিপোর্ট অনুযায়ী,কলকাতার ওই মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য কয়েক বছর আগেও দুই শতের কাছাকাছি পাকিস্তানি এসেছিল কলকাতায়৷ কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তানিদের ট্যুরিস্ট ভিসায় কলকাতায় আসার ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে । ২০১৯ সালে ৫০ জন পাকিস্তানিকে কলকাতায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল । করোনা পরিস্থিতির কারনে ২০২০-২১ সালে একজনও পাকিস্তানিকে আসার অনুমতি দেয়নি ভারত সরকার । করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত বছর ৩০-৩৫ জন পাকিস্তানিকে কলকাতায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় । এমনকি একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ দেখতে আসার অগনিত পাকিস্তানির আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক । এছাড়া কলকাতায় বসবাসকারী পাকিস্তানি মহিলাদেরও থাকতে হয় গোয়েন্দাদের র্যাডারের মধ্যে । ওই সমস্ত মহিলাদের দেশের অন্য কোথাও যেতে চাইলে ভারত সরকারের অনুমতি নিতে হয় । সেখানে গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারির মধ্যে থাকতে হয় তাদের । বাপের বাড়ির লোকজনের যাতায়ত কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে কলকাতায় বসবাসকারী মহিলারা ফোনে নিয়মিত পাকিস্তানে বাপের বাড়ির সাথে যোগাযোগ করেন । তার উপরেও কড়া নজরদারি রাখে গোয়েন্দারা । এখন প্রেম করে ভারতে আসা সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর পাকিস্তানের মহিলাদের কার্যত বন্দী জীবন কাটাতে হচ্ছে এদেশে । ভারতীয় নিয়ম অনুযায়ী টানা ১৫ বছর এদেশে বসবাস করলে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার কথা । কিন্তু পাকিস্তানি মহিলাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি করি করা হচ্ছে ।।