একদিন ওয়েবডেস্ক,রামপুরহাট(বীরভূম),২৬ মার্চ : বগটুই কান্ডে ২১ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল সিবিআই । ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯ প্রভৃতিসহ একাধিক গুরুতর ধারায় মামলা রজু করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে । শুক্রবার রাতেই সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে ৩০ জনের একটি দল রামপুরহাট পৌঁছে গিয়েছিলেন । প্রথমে পুলিশের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন । সিটের কাছ থেকে নিয়ে নেন তদন্তের সমস্ত কাগজপত্র ও কেস ডাইরি । শনিবার সিএফএসএলকে সাথে নিয়ে একাধিক দলে ভাগ হয়ে বগটুই গ্রামে যান তদন্তকারী আধিকারিকরা । পোড়া বাড়িগুলির ভিডিও করেন । স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন তাঁরা । গ্রামবাসী সোনা শেখের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে ডিআইজি অখিলেশ সিংকে । সিবিআইয়ের একটি দলকে যেতে দেখা গেছে মিহিলালের বাড়িতেও । তবে এফআইআর অভিযুক্তদের নামের তালিকা এদিন বিকেল পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি ।
গত সোমবার রামপুরহাট ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বগটুই গ্রামের বাসিন্দা ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করে পালায় বাইক আরোহী কিছু দুষ্কৃতী । আর তারপরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা গ্রাম । ওইদিন রাতের দিকে ১০-১২ টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । বেশ কয়েকজন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান । প্রশাসনের দাবি মৃতের সংখ্যা ৮ জন । তবে স্থানীয়রা আরও বেশি দাবি করেছেন ।
এদিকে রাজ্য সরকার ঘটনার তদন্তের জন্য সিট গঠন করে । রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে সিট ও পুলিশ । দাবি ওঠে সিবিআই তদন্তের । পরে কলকাতা হাইকোর্ট বাগটুই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রজু করে । শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে তদন্তভার নিজের হাতে নেয় সিবিআই । এই ঘটনায় এদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে খুন,সশস্ত্র দাঙ্গা চালানো, অগ্নিসংযোগ,ভাঙচুরসহ মোট সহ ১০ টি ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে খবর ।
জানা গেছে,এফআইআর-এ সিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে টিএমসি নেতা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান ভাদু শেখের হত্যার পরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে বগটুই গ্রামে । নেতাকে খুনের প্রতিশোধ নিতেই ৭০-৮০ জনের একটি দল ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল । তারা খুনের উদ্দেশ্যে ভাংচুর ও বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল । সিবিআইয়ের এই দাবির পরে অনুব্রত মণ্ডলের টিভি বিস্ফোরণে আগুন লেগে যাওয়ার তত্ত্ব কার্যত ধোপে টিকলো না । এখন সিবিআইয়ের তদন্তের মোড় কোন বাঁকে যায় সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ ।
এদিকে এদিন বগটুই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল শ্মশানের নিস্তব্ধতা । শুধু সিবিআইয়ের তদন্তকারী দলের হাঁটাচলা গ্রাম জুড়ে । গ্রেফতারির ভয়ে পুরুষশূন্য গোটা গ্রাম । মহিলারা নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন ।।