এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২১ মার্চ : গার্ডেনরিচের আজাহার মোল্লাবাগানে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট । বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ গার্ডেনরিচে বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় একগুচ্ছ প্রশ্ন তোলে । যে সমস্ত অফিসারদের বেআইনি নির্মাণ দেখার দায়িত্ব ছিল উলটে তাদের উপরেই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান বিচারপতি । পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং গৃহহীনদের আশ্রয়ের কি ব্যবস্থা করা হয়েছে তা রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এদিকে গার্ডেনরিচ কান্ডে তদন্তে ধরা পড়েছে একের পর এক অনিয়ম । রাজ্য ফরেনসিকের পদার্থবিদ্যা বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জানতে পারেন যে মাটি ও বালি মেশানো সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল। মাটি পরীক্ষা না করে এবং পরিকল্পনা ছাড়াই তড়িঘড়ি পিলার গেঁথে একের পর এক তলা নির্মানের কাজ চলছিল ।
কিন্তু কেন এত দ্রুততার সঙ্গে ৫ তলা ভবন তৈরি করতে গেলেন ধৃত প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম ? এই বিষয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে যে জায়গায় বহুতল নির্মান করছিল ওয়াসিম সেই জায়গার মালিক আলিফনগরের সরফরাজ ওরফে পাপ্পু ও তার ভাই । একটা ফ্লাট দেওয়ার শর্তে প্রথমে সরফরাজ জায়গা ছাড়তে রাজি হলে তার ভাই বেঁকে বসে । এরপর প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম তাকে রীতিমতো হুমকি দিতে শুরু করে । এদিকে সরফরাজও জায়গা ছেড়ে দিতে টালবাহানা শুরু করে দেয় । তখন ওয়াসিম তাদের প্রাণে মারার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ । শেষ পর্যন্ত দুই ভাই ফ্লাটের লোভে পড়ে জায়গা ছেড়ে দেয় ওয়াসিমকে । আর জায়গা হাতে পেতেই দ্রুত বহুতল নির্মানের কাজ শুরু করে দেয় সে । বিষয়টি আদালত চলে যেতে পারে এই আশঙ্কায় পুরসভার অনুমতি ও কোনো প্লানিং ছাড়াই সে বহুতল নির্মানের কাজ তড়িঘড়ি শুরু করে দেয় ।
কিন্তু এখানেই কলকাতা পুরসভা ও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়ে একরাশ প্রশ্ন উঠছে । বিশেষ করে বহুতলের আশপাশের ঝুপড়িবাসীরা বেআইনি নির্মান নিয়ে বারবার অভিযোগ তুললেও শাসকদলের পদাধিকারীরা কোনো গুরুত্বই দেয়নি বলে অভিযোগ । যদিও তদন্ত প্রক্রিয়ায় স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলারের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে লালবাজারের বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে ।।