দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১০ এপ্রিল : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় শ্বশুরবাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধূ । বছর পঁচিশের ওই গৃহবধূর নাম অনিন্দিতা কুণ্ডু(হালদার) । তাঁর শ্বশুরবাড়ি কাটোয়া থানা এলাকার অগ্রদ্বীপে । রবিবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির একটি ঘর থেকে বধূকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করার পর কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ । মৃতার পরিবারের অভিযোগ অতিরিক্ত পণের জন্য চাপ এবং তফসিলি জাতিভূক্ত হওয়ার কারনে অনিন্দিতার উপর মানসিক নির্যাতন চালাতো স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন । সোমবার বিকেলে মৃতার বাবা গৌতম হালদার এনিয়ে অনিন্দিতার স্বামী মনোজিত কুণ্ডু, শাশুড়ি শিবানী কুণ্ডু এবং মনোজিতের এক বোনের বিরুদ্ধে কাটোয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে,নদীয়া জেলার নৃসিংহপুর এলাকায় বাপের বাড়ি অনিন্দিতার । অনিন্দিতারা তপসিলি জাতি ভূক্ত । অন্যদিকে তাঁর স্বামী মনোজিত কুণ্ডুরা সাধারণ জাতিভুক্ত । মনোজিত গুজরাতে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অনিন্দিতাকে দেখে পছন্দ হয়ে গিয়েছিল মনোজিতের । মনোজিত বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করলে মাস পাঁচেক আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় । মৃতার সম্পর্কীয় দাদা অশোক হালদারের অভিযোগ,মনোজিত নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করলেও আমার বোনকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন উঠতে বসতে ‘নিচু জাতির মেয়ে’ বলে তিরস্কার করা হত । এনিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছিল আমার বোন ।’ পাশাপাশি মৃতার বাবা মৃতার বাবা গৌতমবাবু বলেন,বিয়ের পরেও মনোজিত পন বাবদ অতিরিক্ত টাকা দাবি করেছিল । সেই টাকাও দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু মেয়ের উপর মানসিক নির্যাতন বন্ধ হয়নি ।’
তিনি আরও জানান,বিয়ের পর তাঁর মেয়েকে গুজরাটে নিয়ে গিয়েছিল মনোজিত । কিন্তু মাস দেড়েক আগে মনোজিত তার মায়ের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনিন্দিতাকে অগ্রদ্বীপে পাঠিয়ে দেয় । তারপর থেকে অনিন্দিতা অগ্রদ্বীপে ছিল । কিন্তু রবিবার রাতে খবর আসে তাঁর মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে । এরপর তারা কাটোয়া হাসপাতালে এসে মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান । এদিন মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের পর অন্তেষ্টিক্রিয়া ক্রিয়া করা হয় ।।