দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),৩০ সেপ্টেম্বর : স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না । সেই কারনে সমস্যার নিষ্পত্তি করতে দুই পরিবারের লোকজনদের নিয়ে দলের পার্টি অফিসে বসে আপোষ মিমাংসা করছিলেন সিপিএমের নেতারা । অভিযোগ, আলোচনা চলার সময় বাপের বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরকে ধরে বেদম পিটিয়ে দিলেন বধূ । শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে সিপিএমের সিপিএমের এরিয়া কমিটি কার্যালয়ে ৷ পুত্রবধূ খায়রুন্নেসা খাতুন,খায়রুন্নেসার বাবা ও ভাইয়ের এলোপাথাড়ি মারধরে গুরুতর জখম হন খায়রুন্নেসার শ্বশুর শেখ জহিরুল ইসলাম । তিনি বাঁম চোখে গুরুতর চোট পেয়েছেন বলে জানা গেছে । এদিকে বধূ ও তার পরিবারের রুদ্ররূপ দেখে হতভম্ব হয়ে যান সিপিএমের নেতারা । শেষে তারাই দু’পক্ষকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন । লাটে ওঠে আপোষ মিমাংসা । আজ শনিবার ছেলে শেখ মফিজুল হককে সঙ্গে নিয়ে ভাতার থানায় অভিযোগ জানান প্রহৃত শেখ জহিরুল ইসলাম । এদিকে এত কিছু ঘটনার পরেও ভাতারের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএম নেতা সুভাষ মণ্ডলের দাবি, দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনার সময় একটু আধটু ঝামেলা হয়েছিল । তবে এমন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জানা গেছে,ভাতারের মাহাতা গ্রামে বাপের বাড়ি খায়রুন্নেসা খাতুনের । প্রায় ১১ মাস আগে ক্ষেতিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ জহিরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে মফিজুল মার্বেল মিস্ত্রি শেখ মফিজুল হকের সঙ্গে তার দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল । খায়রুন্নেসার মাসির বাড়ি ক্ষেতিয়া গ্রামে । সেই সূত্রে বধূ প্রায়ই মাসির বাড়ি যেতেন । শেখ মফিজুল হকের অভিযোগ,’আমার স্ত্রীর অধিকাংশ সময়েই মাসির বাড়িতে গিয়ে স্মার্টফোন নিয়েই ব্যস্ত থাকতো । এমনকি রাতে তাকে ডেকে আনতে হত । এতে আপত্তি করলে আমার স্ত্রী রেগে গিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় । তারপর থেকে আর ক্ষেতিয়া গ্রামে আসেনি । এমনকি আমার স্ত্রীকে আনতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন হুমকি দেয় যে খায়রুন্নেসা আমাকে তালাক দিয়ে দেবে । ইতিমধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে ভাতার থানায় একটা অভিযোগও দায়ের করেছে আমার স্ত্রী ।’
জানা যায়,খায়রুন্নেসা খাতুনের শ্বশুরবাড়ির এলাকার এক সিপিএম নেতা দুই পরিবারের মধ্যে আপোষ মিমাংসায় উদ্যোগী হন ।শুক্রবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে দুই পরিবারকে নিয়ে আলোচনায় বসেন সিপিএম নেতা সুভাষ মণ্ডলসহ অনান্য নেতারা । আর আলোচনার মাঝে হঠাৎ শ্বশুর শেখ জহিরুল ইসলামের উপর খায়রুন্নেসা চড়াও হয়ে মারধর করেন এবং তার সঙ্গে তার বাবা ও ভাইও তার সঙ্গে যোগ দেয় বলে অভিযোগ । শেষ পর্যন্ত উপস্থিত সিপিএম নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয় । তারা আপোষ মিমাংসা লাটে তুলে দুই পরিবারকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন ।
এদিকে মাসির বাড়িতে স্মার্টফোন নিয়ে দিনরাত বসে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খায়রুন্নেসা খাতুন । তার পালটা অভিযোগ শ্বশুর বাড়িতে তিনি নির্যাতনের শিকার হতেন । তাই বাপের বাড়ি পালিয়ে আসতে হয়েছে তাকে । উভয় অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।।